ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কিভাবে সুপার স্মার্ট ক্যারিয়ার বিল্ড করা সম্ভব

ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কিভাবে সুপার স্মার্ট ক্যারিয়ার বিল্ড করা সম্ভব

ঠিক এই মুহূর্তে প্রায় ১.২ বিলিয়ন  ওয়েবসাইট রয়েছে পৃথিবীতে।

Yahoo এর করা এক জরীপ থেকে দেখা যায়, শুধুমাত্র আমেরিকাতেই প্রতি মাসে প্রায় ১৬ মিলিয়নের বেশী অর্থাৎ ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশী ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়ে থাকে! যার প্রায় ৭০% এরও বেশী করা হয় প্রোফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার হায়ার করে এবং যার মার্কেট ভেল্যু ২০.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা!

আমাদের কাছে শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্য এবং গোটা পৃথিবীতে এর পরিমাণ দিন দিন ব্যাপক হারে বেড়ে চলেছে।

সবচাইতে মজার ব্যাপার হচ্ছে, যেখানে তুমুল হারে প্রতিদিন গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তার তুলনায় নতুন ওয়েব ডিজাইনারের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। প্রতিদিন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরের মার্কেট সাইজ বিদ্যুত গতিতে বেড়ে চললেও সেই হারে বাড়ছে না ওয়েব ডেভেলপারের সংখ্যা। এর ফলে বিশাল চাহিদা তৈরি হয়েছে এই সেক্টরে!

এর সবচাইতে বড় প্রমাণ আপনি বিভিন্ন ফ্রীল্যান্স মার্কেটে কাজে বিড করতে গেলেই বুঝতে পারবেন। একটা গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজে যে পরিমাণ আবেদন পরে, একই মাপের ওয়েব ডিজাইনের কাজ তার থেকে অনেক গুণ কম আবেদন পরে। তার মানে বোঝা যায় এক বিশাল ওয়ার্কার ঘাটতি রয়েছে এই সেক্টরে।

আর এই জন্যই এখন নতুন ওয়েব ডিজাইনার এবং ডেভেলপাররা নতুন অবস্থাতেও খুব সহজেই প্রচুর কাজ পেয়ে যান।

এই সেক্টরে এত সম্ভাবনা থাকার পরেও মানুষ কেন আসতে চায় না?

এর কারন হচ্ছে, এটি শিখতে সামান্য একটু কঠিন। স্বভাবতই মানুষ যেটা সহজ সেটাই শিখতে চায়, কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা এটা একবার ভাবি না যে, যেটা সহজ সেটা তো সবাই ই শিখে, ফলে সেখানে কম্পিটিশন অনেক গুণ বেড়ে যায়, আর যেটা একটু কঠিন সেটা কিন্তু সবাই শিখতে পারে না, ফলে সেখানে কম্পিটিশন অনেক কম এবং কাজের ডিমান্ড অনেক বেশী।

কাজেই, শিখতে সামান্য একটু কঠিন হলেও শেখা/পারিশ্রমিক অনুপাতে কিন্তু ওয়েব ডিজাইনকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে বুদ্ধিমানেরা 🙂

এবার চলুন একটু কাজ সম্পর্কে জানা যাক,

ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট কি?


এটি হচ্ছে ওয়েবসাইট তৈরি করার কাজ। যদি জানতে চান ওয়েবসাইট কি, তাহলে একটি ওয়েবসাইটের কমন উদাহরণ হলো- ফেসবুক।

এই ফেসবুক যেমন তৈরি করা হয়েছে আমাদের সোশ্যাল এনগেজমেন্ট যেমন- ফ্রেন্ড দের সাথে চ্যাট করা, স্ট্যাটাস দেয়া, কমেন্ট করা ইত্যাদির জন্য, ঠিক তেমনি এক এক কোম্পানী তাদের এক এক রকমের কাজের জন্যও ওয়েবসাইট তৈরি করে।

কেউ কেউ তাদের ওয়েবসাইটে গেম খেলার সুবিধা দেয়, কেউ আবার বিভিন্ন ইনফরমেশন শেয়ার করে, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ গুলো অনলাইনে ভর্তির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে, আবার কেউ কেউ তার কোম্পানীর বিভিন্ন তথ্য প্রদর্শন করানোর জন্যও ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকে।

যেমন- আপনি এখন আমাদের প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে আছেন (www.zonaki.org)!! এখানে আমরা বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করি এবং আপনিও এখন আমাদের দেয়া তথ্যগুলোই পড়ছেন (y)

এখানে খেয়াল করবেন, আমরা কিন্তু বার বার ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট এই দুইটা পার্ট এর কথা বলছি, আসলে এ দুটো কি? চলুন জেনে নেই…


ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য কোথায়?



ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে একটা পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট তৈরির দুটো ধাপ। ডিজাইন হচ্ছে প্রথম ধাপ এবং ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে শেষ ধাপ।

ওয়েব ডিজাইন অংশে একটি ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট-এন্ড অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা যে অংশ দেখতে পায় সেটা করা হয়ে থাকে আর ডেভেলপমেন্ট অংশে ব্যাক-এন্ড অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইটের ভেতরের ফাংশনাল পার্ট গুলো ডেভেলপ করা হয়ে থাকে।

বিষয়টা ক্লিয়ার হবে যদি আমরা ফেসবুকের কথাই চিন্তা করি- ফেসবুকে আমরা যে বিভিন্ন কালার, লেখা, ছবি ইত্যাদি দেখি, এই প্রদর্শনের কাজ গুলো হয় ডিজাইন পার্ট এর মাধ্যমে, আর এই যে আমরা সেখানে রেজিস্ট্রেশন করতে পারি, পোস্ট করতে পারি, কমেন্ট করতে পারি এই জাতীয় ফাংশনাল কাজ গুলো আটোমেটিক করা হয় ডেভেলপমেন্ট পার্ট থেকে।

একজন ওয়েব ডিজাইনার এর বেতন কত?




Indeed.com এর দেয়া এক তথ্য অনুযায়ী একজন ওয়েব ডিজাইনার এর গড় বাৎসরিক বেতন ৬০,১৮২ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৪,৮১৪,৫৬০ টাকা, প্রতি মাসে হিসেব করলে দাড়ায়- ৪ লক্ষ টাকা!!
এবার আপনি ই একটু ভেবে দেখুন, কেন আপনি এই পেশায় যুক্ত হবেন না??

এর জন্য কি সাইন্স বিভাগের ছাত্র হতে হবে?


অনেকেই ভেবে থাকি ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভেলপার হওয়ার জন্য সাইন্স অথবা CSE এর স্টুডেন্ট হতে হয়। কথাটা সম্পূর্ণ ভূল। ওয়েব ডেভেলপার হওয়ার জন্য সাইন্স বিভাগের বা সিএসই এর স্টুডেন্ট হতে হয় না।

যে কেউ কাজ শিখতে পারেন এবং এই সেক্টরে ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারেন।

প্রকৃতপক্ষে এর সাথে একাডেমিক পড়ালেখার কোন সম্পর্কই নেই, এটাও একটা জ্ঞান, এবং জ্ঞান সবাই অর্জন করতে পারে।

আমাদের দেশের চাকরীর জন্য সার্টিফিকেট লাগে, কিন্তু জ্ঞান অর্জনের জন্য সার্টিফিকেট দরকার হয় না।

কাজেই, নিশ্চিতভাবে আপনিও শিখতে পারেন ওয়েব ডেভেলপিং।

                                   কিভাবে শুরু করবেন ক্যারিয়ার?




ওয়েব ডিজাইনে ক্যারিয়ার শুরু করার পূর্বে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি ডিজাইনার হবেন, নাকি ডেভেলপার, নাকি দুটোই। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, আপনি ওয়েব ডিজাইন না জেনে ভাল ডেভেলপার হতে পারবেন না কিন্তু ওয়েব ডেভেলপিং না জেনেও আপনি ভাল ডিজাইনার হতে পারবেন।



এক্ষেত্রে আমাদের সাজেশন হচ্ছে- আপনি দুটোই শেখেন।


অধিকাংশ ক্লাইন্ট ই চায় একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট একজনের কাছ থেকেই করিয়ে নিতে কারন এতে করে তার সময় এবং টাকা দুটোই বেচে যায়। আর আপনি যদি দুটো কাজই জানেন তাহলে প্রথম দিকের ছোট ছোট ক্লাইন্ট গুলোকে আপনি নিজেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাপোর্ট দিতে পারবেন। এতে করে আপনার প্রাথমিক লেভেল এর ইনকাম বেড়ে যাবে।

ধীরে ধীরে আপনি যখন মার্কেটে আপনার অবস্থান তৈরি করে নিতে পারবেন তখন চাইলে আপনি শুধু ডিজাইন অথবা শুধু ডেভেলপমেন্ট করতে পারেন। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে দুটো শেখাই জরুরী।

এর জন্য কি কি শিখতে হবে?

ইংরেজী ভাষা শেখার জন্য যেমন আমাদের ABCD… শিখতে হয়। ঠিক তেমনি একটি ওয়েবসাইটও সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু কোড লেখার মাধ্যমে হয়ে থাকে যেগুলোকে ওয়েবের ল্যাঙ্গুয়েজ বা ভাষা বলা হয়ে থাকে।

ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ল্যাঙ্গুয়েজ রয়েছে যেমন- HTML, CSS, JavaScript, PHP, ASP, MySQL

এছাড়াও বিভিন্ন Content Management System যেমন- WordPress, Drupal, Joomla, Magento, October, Textpattern এবং PHP এর বিভিন্ন ফ্রেমওয়ার্কও রয়েছে।

নতুনদের মধ্যে এগুলো এক বিশাল কনফিউশনের সৃষ্টি করে- আসলে আপনি শিখবেন কোনটা? কারন এত সব তো আর শেখা সম্ভব নয়। আর সব গুলো শেখার দরকার ও নেই।

হ্যা, আপনাকে সব শিখতে হবে না। আমরা আপনাকে গাইডলাইন দিয়ে দিচ্ছি ঠিক কোনগুলো শিখতে হবে-

ওয়েব ডিজাইন পার্টে শিখতে হবে- HTML, CSS, JavaScript

ওয়েব ডেভেলপমেন্ট পার্টে শিখতে হবে- PHP অথবা ASP, এক্ষেত্রে আপনার জন্য আমার সাজেশন হচ্ছে  PHP বেসিক শিখে ফেলুন এবং এর সাথে WordPress শিখে নিন ব্যাস!!

তাহলে বাকী গুলো কি শিখবো না?!


হ্যা অবশ্যই শিখতে পারেন। তবে বিগিনার হিসেবে এবং বর্তমান মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত বিষয় গুলোর চাহিদাই সেরা এবং এটাতে দ্রুত শেখা এবং কাজ পাওয়া সম্ভব।

কাজ গুলো শিখবেন কিভাবে?


যে কোন কিছু শেখার জন্য সবচাইতে সহজ উপায় হচ্ছে কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কোর্স করে নেয়া।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা থাকি তো বাংলাদেশে, এখানে ভাল প্রতিষ্ঠান পাবেন কোথায়?

ডিজিটাল বিপ্লবের এই যুগে এই প্রশ্ন করাটা আসলেই বোকামী বলে মনে করি আমি। কারন, আপনি বাংলাদেশে থাকলেও আপনার কম্পিউটারের ইন্টারনেট কিন্তু বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, আপনি চাইলে ঘরে বসেই আমেরিকান কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কোর্স করতে পারেন, আপনি চাইলে অনলাইনেই বিভিন্ন বড় বড় ইউনিভার্সিটি থেকে পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেটও নিতে পারেন।

এই ব্যাপারে আপনার জন্য আমার কিছু কার্যকরী সাজেশন-


ইন্টারনেটে ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট নিয়ে অনেক অনেক আর্টিকেল, ভিডিও টিউটোরিয়াল আছে। কিন্তু সেগুলোর সমস্যা হচ্ছে ৯৯% ই গুছিয়ে দেয়া থাকে না। সেগুলো দেখে আপনি শিখতে তো পারবেন কিন্তু একেবারে নতুন অবস্থায় আপনার তো বেসিক-ই নেই, বেসিক না থাকার কারনে সেগুলো সব আপনার মাথার উপর দিয়ে যাবে।

তাই, ইন্টারনেট থেকে শিখতে হলে আপনাকে প্রথমে ভেরি বেসিক পার্ট টুকু জানতেই হবে। বেসিকটা চলে আসলে বাকীগুলো পানির মত সহজ হয়ে যাবে।

কিন্তু কিভাবে?


খুবই সহজ, ইন্টারনেটে অনেকেই ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট এর উপরে ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরি করে। আপনি সেই টিউটোরিয়াল সংগ্রহ করুন। ভিডিও টিউটোরিয়াল হচ্ছে পৃথিবীতে অন্যতম জনপ্রিয় ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি।

ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে ঘরে বসে বসে ভিডিও দেখে এবং ভিডিওর পাশাপাশি কথা শোনার মাধ্যমে সহজেই বেসিক লেভেল, ইন্টামিডিয়েট লেভেল এমনকি অ্যাডভান্স লেভেল ও শেখা সম্ভব।

তবে, বাংলাদেশে এখনো খুব ভাল মানের এমন ভিডিও টিউটোরিয়াল এর সংখ্যা হাতে গোনা দুই একটা।

যদি ইংরেজী বোঝেন তাহলে Lynda.com এর প্রিমিয়াম টিউটোরিয়াল দেখুন।

আর যদি বাংলায় টিউটোরিয়াল চান তাহলে আমাদের সুপারিশ হচ্ছে ওয়েব গুরু টিউটোরিয়াল। রকমারি.কম বেস্ট সেলার কোর্স এটি।

কাজ‌ শিখে ইনকাম শুরু করতে কতদিন সময় লাগতে পারে?



অনেকেই বলে থাকে আপনাকে সুপার এক্সাপার্ট হয়ে তারপরে কাজে আসতে হবে। আমার পার্সোনাল লাইফের অভিজ্ঞতা বলে এটা সম্পূর্ণ ভুল একটি কথা।

আমি কখনো সুপার এক্সাপার্ট হয়ে এই ফিল্ডে আসি নাই। প্রকৃতপক্ষে আমি নিজেও এখনো একজন ছাত্র। প্রায় প্রতিটা প্রোজেক্ট করতে গিয়েই নতুন কিছু না কিছু শেখা হয়।

তবে হ্যা, আপনাকে কিন্তু একটা নির্দিষ্ট লেভেলে গিয়েই তারপরে কাজের কথা চিন্তা করতে হবে। এর জন্য আপনাকে প্রথমে কাজগুলো খুব ভালভাবে শিখতে হবে। মিনিমাম ১০ টা টেস্ট প্রোজেক্ট করতে হবে। এরপরে মিনিমাম ৫ টি ফ্রী কাজ কাউকে করে দিতে হবে এবং তাদের ফিডব্যাক নিতে হবে।

যখন তারা আপনার কাজের প্রশংসা করবে তখন বুঝবেন আপনি প্রোফশনাল কাজ করার জন্য প্রস্তুত।

এক্ষেত্রে একটাই সূত্র, আপনি তত দিন ই ইনকাম করতে পারবেন যত দিন আপনি আপনার মেধার উপরে ইনভেস্ট করতে পারবেন। যেদিন শেখা বন্ধ, ভেবে নিন শীঘ্রই আপনার আয় ও বন্ধ হয়ে যাবে।


কাজ শিখতে কতদিন সময় লাগবে?


এটি মূলত আপনার শেখার স্পীড, আপনার বোঝার দক্ষতা এবং আপনি প্রতিদিন কতটুকু সময় দিচ্ছেন তার উপরে নির্ভর করে।

আপনাকে অনেকেই হয়ত বলে থাকবে এক বছর লাগে শিখতে, কিন্তু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দৈনিক ৩-৪ ঘণ্টা মনোযোগের সাথে সময় দিলে ৩-৪ মাসের মধ্যেই বিষয়গুলো খুব ভালভাবে রপ্ত করা সম্ভব।

প্র্যাক্টিস, ফ্রী পোজেক্ট নিয়ে আরো ২ মাস। এরপরে প্রথম কাজ পাওয়ার জন্য আরো ১-২ মাস, এই মোট ৬-৭ মাসের মধ্যেই টাকা ইনকাম করা সম্ভব।

তবে, এর জন্য যথেষ্ট হার্ড ওয়ার্ক এবং ডেডিকেশন থাকতে হবে।

একটা বিষয় মনে রাখা জরুরী,

“ক্লাসের সবাই একই পাঠ্যবই পড়ার পরেও পরীক্ষায় সবাই পাশ করে না। তাই হার্ডওয়ার্ক এবং ডেডিকেশন না থাকলে ফ্রীল্যান্সিং সেক্টরে আপনি কিছুই করতে পারবেন না। এটা একটা সিরিয়াস পেশা”

শিক্ষা চলাকালীন গাইড


প্রথমেই টাকা ইনকাম করার একটা রুলস বলে দেই-

First LEARN and then cut the “L”


অর্থাৎ, যদি আপনি EARN করতে চান তাহলে প্রথমে LEARN শব্দটিকে মাথায় ঢোকান, যখন আপনি LEARN করতে পারবেন তখন L E A R N থেকে প্রথম “L” অক্ষরটি নিজে নিজেই বাদ হয়ে যাবে এবং আপনার সেই LEARN তখন EARN এ কনভার্ট হয়ে যাবে।

এটা হচ্ছে মানি মেকিং এর প্রথম রুলস। সত্যি বলতে আমরা সবাই-ই তো শিখি, কিন্তু কতটুকু ভালভাবে শিখি সেটাই হচ্ছে বিষয়।

যে শিক্ষা আপনার ভেতরে কাজ করতে পারার কনফিডেন্স যোগাতে পারে না, সে শিক্ষা এখনো উপার্জন করার জন্য পর্যাপ্ত নয়


হ্যা ঠিক তাই। কনফিডেন্স ছাড়া শিক্ষা দিয়ে কিছুই হবে না। কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে আমরা একটু শিখেই ওভার কনফিডেন্ট হয়ে পরি।

অল্প জ্ঞানের কনফিডেন্স, বিপদ আর অপমান দুটোই ডেকে নিয়ে আসে


আর আমাদের দেশের অধিকাংশ স্টুডেন্টদের ফ্রীল্যান্সিং এ ব্যর্থতার এটাই হচ্ছে সবচাইতে বড় কারন। আমরা সামান্য একটু শিখেই নিজেকে অনেক বড় ভাবতে থাকি যা আমাদের ভেতরে ওভার কনফিডেন্স জন্ম দেয়। এই বিষয়ে কিন্তু খুবই সতর্ক থাকতে হবে যেন কোন অবস্থাতেই আপনার ভেতরে কোনভাবেই

কাজ শেখার সময় নিজেকে সব সময় ছোট ভাবতে হবে। এটা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হলেও মানুষের স্বাভাবিক সাইকোলোজি এমনটাই বলে, নতুন কিছু শিখলে আমরা বেশী আনন্দিত হয়ে পরি, যা অনেকের ক্ষেত্রে বিপদ ডেকে আনে। তাই এ ব্যাপার খুব সাবধান থাকতে হবে।

ওয়েব ডিজাইন শেখার আরেকটি রুলস হলো-

যতটুকু টাইম শিখবেন তার ৩ গুণ টাইম প্র্যাক্টিস এ ব্যয় করবেন


আপনি যদি ১ ঘণ্টা শিখতে ব্যয় করেন তাহলে সাথে সাথে সেটাই ৩ ঘণ্টা বার বার প্র্যাক্টিস করবেন। শুনতে খুবই সহজ কিন্তু অত্যন্ত পাওয়ার ফুল একটি উপায়।

যদি উপরের সিম্পল দুটো রুলস মাথায় রেখে কাজ শিখতে পারেন তাহলে আশা করি আপনার সফলতা অনেকাংশেই সিকিউর হয়ে যাবে।

শিক্ষা পরবর্তী ক্যারিয়ার বিল্ড আপ গাইড

 



আমরা ফ্রীল্যান্সিং মানেই শুধু ইন্টারনেটে চাকরী করাকেই বুঝি। কিন্তু ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট শেখার পরে আপনি চাইলে চাকরী এবং ব্যবসা দুটো করেই টাকা আয় করতে পারেন।



কিছু উপায় যার মাধ্যমে ওয়েব ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট শিখে আয় করা যাবেঃ

  • দেশী কোন কোম্পানীতে ওয়েব ডিজাইনার অথবা ডেভেলপার হিসেবে চাকরী করতে পারবেন
  • আপওয়ার্ক, ফ্রীল্যান্সার, ফাইভার ইত্যাদি বিভিন্ন ফ্রীল্যান্সিং প্লাটফর্মে কাজ করতে পারবেন
  • নিজেই একটি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ফার্ম খুলে নিজের ওয়েব ডেভেলপিং বিজনেস প্রতিষ্ঠা করতে পারেন
এছাড়াও কাজ জানা থাকলে ইনকাম সোর্স বের করা কঠিন কিছু না। আমাদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে আমরা চিন্তা করি না, আমরা শুধু দুশ্চিন্তা করি।

আপনাকে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি-


শেষ কবে আপনি আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে পজিটিভ চিন্তা করেছেন?? আর যদি করেও থাকেন সে অনুযায়ী কতটুকু চেষ্টা করেছেন??

আমি জানি, চিন্তা অনেকেই করেছেন কিন্তু পজিটিভ কোন চিন্তা নয়, অধিকাংশই নেগেটিভ চিন্তা করেছেন যেমন- আমাকে দিয়ে হবে না, আমি পারি না, এই সমাজ ভাল না, আমার হাতে টাকা নাই কাজ করার মত, ব্যবসা বুঝি না, চাকরী আমার জন্য নয় ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক অনেক কারন বের হয়েছে কাজ না করার জন্য।

“সফল লোকদের কাছে সফল হওয়ার জন্য অনেক কারন থাকে, কিন্তু ব্যর্থদের কাছে ব্যর্থতার জন্য থাকে অগণিত অজুহাত”

চাকরী, ব্যবসা অথবা ফ্রীল্যান্সিং যে যেটাই করেন না কেন, কাজ শেখার পরেই এই কাজ গুলো করে নিতেই হবেঃ


১. কাজ শেখার পর অবশ্যই অবশ্যই কমপক্ষে ১০ টি পূর্ণাঙ্গ টেস্ট প্রোজেক্ট করুন
২. এই প্রোজেক্টগুলো শো অফ করে আপনার নিজের একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করুন, এমন একটি পোর্ট ফোলিও সাইটের উদাহরণ দেখুন এখানে
৩. যদি সম্ভব হয় কোন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ফার্ম এর সাথে ইন্টার্নি করুন, ঢাকায় ইদানিং অনেক ফার্ম তৈরি হচ্ছে যারা কম টাকার বিনিময়ে কাজ করার সুযোগ দেয়, তাদের কাছে স্বল্প টাকায় অথবা ফ্রীতে ১-২ মাস কাজ করুন

যদি জব করতে চান



যদি দেশী কোন ওয়েব ডেভেলপিং ফার্ম এ জব করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে ইন্টার্নি করতে হবে। ইন্টার্নি সম্পূর্ণ ফ্রীতে অথবা সামান্য টাকার বিনিময়ে হতে পারে। ২-৩ মাস ইন্টার্নি করার পরে দেখবেন বেশ ভাল দক্ষতা হয়ে যাবে কর্পোরেট লাইফ সম্পর্কে। ভাল পারফরমেন্স দেখাতে পারলে ইন্টার্নি অবস্থাতেই ওই কোম্পানীতেই জব করার সুযোগ পেতে পারেন।

আপনি বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, বাংলাদেশে ভাল ডেভেলপারের প্রচুর অভাব। ভুরি ভুরি নামমাত্র ওয়েব ডেভেলপার থাকলেও ভালমানের ওয়েব ডেভেলপারের সত্যিই এখনো খুব সংকট।

আপনিও এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন

যদি ব্যবসা করতে চান


ওয়েব ডেভেলপিং ফার্ম এ রয়েছে ব্যবসার ব্যপক সম্ভাবনা। সামান্য কিছু পুজি নিয়েই খুলতে পারেন নিজের ওয়েব ডেভেলপিং ফার্ম। শুরুতে চাইলে নিজেও কাজ করতে পারেন এবং ধীরে ধীরে আরো ডেভেলপার রেখে কাজ করাতে পারেন।

এই জাতীয় ব্যবসার জন্য আলাদা অফিসের প্রয়োজন হয় না, ঘরে বসেও পুরো ব্যবসা কন্ট্রোল করা সম্ভব।

তবে যে কোন ব্যবসার মতই ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার জন্য ভাল শ্রম দিতে হবে এবং অবশ্যই সফল স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করতে হবে।

টিপসঃ যদি এই জাতীয় ব্যবসা করতে চান তাহলে প্রথমে নিজে কাজ শিখুন এবং ছোট কোন প্রতিষ্ঠানে কয়েক মাস জব করুন। ছোট প্রতিষ্ঠানে জব করলে আপনি তাদের ব্যবসার সিস্টেম গুলো জানতে পারবেন ফলে সেগুলো আপনি আপনার কোম্পানীতে অ্যাপ্লাই করতে পারবেন।

যদি ফ্রীল্যান্সিং করতে চান

হ্যা, উপরের তিনটার মধ্যে বাংলাদেশীদের সবচাইতে পছন্দ হচ্ছে ফ্রীল্যান্সিং। রিস্ক না থাকার কারনে সবাই এটার দিকেই দৌড়ান।

ফ্রীল্যান্সিং করার জন্য কাজ শেখাটা সহজ। প্রকৃতপক্ষে অধিকংশ স্টুডেন্ট সহজেই কাজগুলো শিখে ফেলে। কিন্তু প্রধান সমস্যা তৈরি হয় কাজ শেখার পরে।

ভাইয়া কাজ তো শিখে ফেলেছি কিন্তু কাজ পাই না কেন? – নতুনদের মুখ থেকে শোনা খুবই কমন একটি প্রশ্ন


দেখুন, কাজ পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন রুলস নেই, একেক মানুষ একেক রকম স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করে কাজ নিয়ে থাকে। তবে আপনার জন্য আমরা কিছু বুলেট প্রুফ ট্রিক দিলাম যেগুলো অবলম্বন করলে দ্রুত কাজ পাওয়া সম্ভব।

ফ্রীল্যান্স মার্কেটে দ্রুত কাজ পাওয়ার জন্য কিছু টিপস


১. প্রথমেই সুপার স্ট্রং একটি পোর্ট ফোলিও বিল্ড করুন

২. যখনই কোন কাজের আবেদন করবেন, ক্লাইন্টকে সোজা আপনার পোর্টফোলিওর লিঙ্ক দিয়ে দিন

৩. বেশী বিড করলেই বেশী কাজ পাবেন এমন কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিন। সব সময় কম বিড করবেন কিন্তু কোয়ালিটি বিড করবেন। যে কাজ আপনি পারেন না সেটাতে বিড করার কোন প্রশ্নই আসে না, সময় নিয়ে বিড করবেন। মনে রাখবেন প্রতিটা বিড ই একটা নতুন সুযোগ আপনার দক্ষতার প্রমাণ দেয়ার, তাই এটাকে নিয়ে হেলাফেলা করলে কখনোই সফলতা আসবে না

৪.  কোন কাজে আবেদন করার সময় খুব ভাল করে জব ডিসক্রিপশন পড়ে নিবেন। দেখবেন এখান থেকে এমন কোন পয়েন্ট বের করা যায় কিনা যেটা ক্লাইন্ট কে বললে ক্লাইন্ট আপনাকে রিপ্লাই করতে বাধ্য হবে। যেমন ধরুন- ক্লাইন্ট তার কোম্পানীর ওয়েবসাইট তৈরির জন্য জব পোস্ট করলো, আপনি খুব ভাল করে সে কি কি চায় সেগুলো পড়ে বুঝবেন এবং তাকে কি ধরনের সাজেশন দিলে তার পছন্দ হবে সেটা খুজে বের করবেন। এর জন্য প্রয়োজন হলে ১০ মিনিট সময় ব্যয় করে রিসার্চ করবেন। এরপরে তাকে সেই সাজেশন লিখে বিড করবেন এবং সম্ভব হলে বিডে কিছু প্রশ্ন যোগ করে দিবেন যাতে করে ক্লাইন্ট আপনাকে মেসেজ করতে বাধ্য হয়। এটা হচ্ছে বুলেট প্রুফ টেকনিক, এইভাবে ৫ টা বিড করলে কমপক্ষে একটা ক্লাইন্ট এর রিপ্লাই অনায়াসেই পাওয়া যায়।

কাজ চলাকালীন সময়ে খেয়াল রাখতে হবে যে বিষয়গুলো


১. কাজ চলাকালীন সময় সব সময় ক্লাইন্টের সাথে ওপেনলি কথা বলবেন, ধরেন ক্লাইন্ট একটা চাচ্ছে কিন্তু আপনার কাছে মনে হচ্ছে এটা এমন না হয়ে একটু অন্যরকম হলে ভাল হয়, সরাসরি ক্লাইন্টকে সেটা প্রোপোজ করে দিন। ক্লাইন্টের পছন্দ হলে দেখবেন আপনার প্রতি তার বিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে, আর সেটা পছন্দ না হলেও সেটাকে পজিটিভলি নিবে।

২. সবসময় চেষ্টা করবেন ক্লাইন্টের কাজের ডেডলাইনের আগেই তার প্রোজেক্ট জমা দিয়ে দিতে। কারন, তারা সবাই খুব ব্যস্ত। আপনি যদি তার কয়েক দিন সময় বাচিয়ে দিতে পারেন তাহলে সে তো খুশি হবেই এবং অনেক সময় আপনাকে টিপস ও দিবে।

৩. ক্লাইন্টের সাথে দ্রুত কমিউনিকেট করার চেষ্টা করবেন। ক্লাইন্টের মেসজের উত্তর যত দ্রুত দেয়া যায় ততই ভাল

এইভাবে কাজ করতে থাকলে ফ্রীল্যান্সিং এর মাধ্যমেও বেশ ভাল উপার্জন সম্ভব।

সব কথার বড় কথা হচ্ছে- কাজ যদি শিখতে পারেন তাহলে কাজ করার উপায়ের অভাব নেই। এখনো পৃথিবীতে কাজের তুলনায় দক্ষ লোকের সংখ্যা অনেক অনেক কম। কাজেই, টাকার কথা একটু সাইডে রেখে কাজ শিখুন, দক্ষ হোন, যদি হতে পারেন তাহলে টাকা আপনার পেছনে দৌড়াবে।

সাধারণ মানুষ টাকার পেছনে দৌড়ায়, কিন্তু টাকা শুধুমাত্র দক্ষ লোকদের পেছনে দৌড়ায়, আর তাই টাকা আয় করতে চাইলে প্রথমে দক্ষতা অর্জন করুন, টাকা তো এমনিতেই আপনাকে খুজে নিবে।

এই ব্যাপারে আরো হেল্প চান?


আমি সব সময়ই আপনাকে হেল্প করতে প্রস্তুত। এই ব্যাপারে আপনাকে হেল্প করতে পারাটা সত্যিই আমার জন্য আনন্দের।

এই বিষয়ে হেল্প পেতে আমাকে ফেসবুকে মেসেজ করুন এখানে




সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, ডোমেইন, হোস্টিংসহ আইটি রিলেটেড বা ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে পরামর্শ পেতে কল করুন: 01711113852 , 09602333194 অথবা ভিজিট করুন:  www.samaharsoft.com 

Post a Comment

0 Comments