কয়েক দিন আগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হয়ে
গেল। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে নগরবাসী মেয়র আর কমিশনারদের নির্বাচন করেছেন।
সামনে আরও তিনটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন।
নবনির্বাচিত মেয়র আর কমিশনাররা নিশ্চয়ই জানেন, গাজীপুর শুধু একটি নাম নয়, এ এলাকাটি নিজেই একটি ইতিহাস। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী আর টাঙ্গাইলকে চার সীমানার আঁচলে বেঁধে গড়ে উঠেছে গাজীপুর, ইতিহাসের জয়দেবপুর। এখানেই ভাওয়ালের গহিন বনাঞ্চল, গৈরিক মৃত্তিকাকোষের টেকটিলার দৃষ্টিনন্দন জনপদ। রাজধানীর সবচেয়ে কাছের নগরটির গুরুত্ব অন্যান্য নগরের চেয়ে বেশি। এখানে রয়েছে বিপুলসংখ্যক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি, বাটা সু কোম্পানির কারখানাসহ অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান আর একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি ও পাঁচটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ২১টি ডিগ্রি কলেজ এবং ৭০টি মাদ্রাসাসহ প্রাথমিক-মাধ্যমিক-কলেজ পর্যায়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এ এলাকাতেই গড়ে উঠছে বাংলাদেশের প্রথম হাইটেক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি। নগরের কাছাকাছি রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, নন্দন পার্ক, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, বলিয়াদী আর শ্রীফলতলী জমিদারবাড়ি, জাগ্রত চৌরঙ্গী, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক বন্ধুবর হুমায়ূন আহমেদের নুহাশপল্লী আর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ, যেখানে আমরা প্রতি বছর দেখতে পাই মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ, ধর্মানুরাগীদের মিলনমেলা।
কাছাকাছি অবস্থিত দর্শনীয় অনেক স্থান- ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী, সেন্ট নিকোলাস চার্চ, শৈলাট, রাজা শিশুপালের রাজধানী কপালেশ্বর, একডালা দুর্গ, মীর জুমলার সেতু, সাকাশ্বর স্তম্ভ, প্রাচীন রাজধানী ইদ্রাকপুর, টোক বাদশাহী মসজিদ ইত্যাদি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও অবিস্মরণীয় এক নাম গাজীপুর। এখানে ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খানসহ আরও কয়েকজন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনাপর্বে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধের শুরুটা এ গাজীপুরেই। অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তির পদচারণায় মুখরিত ছিল এ জনপদ : মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, রাজনীতিবিদ শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার, ভাইল ফার্মিয়ন কণার আবিষ্কারক এম জাহিদ হাসান, সাহিত্যিক আবু জাফর শামসুদ্দিন, ভাষাসৈনিক মো. শামসুল হক, এদেশের এককালের সর্বোচ্চ ক্যাথলিক ধর্মীয় নেতা আর্চবিশপ পৌলিনুস ডি কস্তা, কবুতর রেসের প্রবর্তক মনির সরকার প্রমুখ।
এমন একটি বিখ্যাত স্থানের, বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি নগরের দায়িত্বভার নিলেন অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম- নিলেন নিজে নিজে নয়, উৎসবমুখর পরিবেশে ২৬ জুন অনুষ্ঠিত একটি সুশৃঙ্খল নির্বাচনের মাধ্যমে। নাগরিকরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নিঃশঙ্ক চিত্তে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত করেছেন তাদের নগরপিতাকে। জনগণের অনেক আশা-ভরসার ঢালি মাথায় নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন নবনির্বাচিত মেয়র। প্রায় বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট, মৃত ড্রেনেজ সিস্টেম, প্রধান সড়কে সারা দিন-রাত ধরে অসহনীয় যানজট আর সাতান্নটি ওয়ার্ডে জমে থাকা অনেক দুঃখগাথায় জর্জরিত গাজীপুর সিটি এলাকার নেতৃত্বে আসা প্রশাসনিক পরিমণ্ডলে নবাগত নগরপিতার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। এরকম হাজারও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদেরও।
একজন নেতা দায়িত্ব নেন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে
কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের প্রত্যাশায়। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা মানেই যুদ্ধের
ময়দানে গমনের প্রস্তুতি নেয়া। যিনি এ যুদ্ধে সাহসিকতা আর কৌশলিক নেতৃত্বের
মাধ্যমে অধরা সাফল্যকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারেন তিনিই সফল নেতা।
একজন সফল নেতা মুখে মুখে কথার ফুলঝুরি ছড়ান না, আবেগী হয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেন না, জনবিমুখ হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অন্যের ক্ষতি করে ‘ক্ষমতাশালী’ হওয়ার চেষ্টা করেন না, গদিনশীন হয়ে গদির অমর্যাদা করেন না, চাটুকারবেষ্টিত হয়ে থাকেন না, কারও ব্যাপারে গিবত করে কান ভারি করার সুযোগ কাউকে দেন না।
বরং তিনি দল-মত, শ্রেণী-গোত্র নির্বিশেষে একজন হয়ে সবার চাওয়া-পাওয়াকে মর্যাদা দিয়ে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিকল্পনা তৈরি করেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের সক্ষমতা তৈরি ও বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন, কর্মীদের সঙ্গে কনসালটেশন করে বাস্তবায়নযোগ্য টার্গেট নির্ধারণ করেন, টার্গেট যথাসময়ে অর্জনের লক্ষে ‘বাস্তবায়ন পরিকল্পনা’ তৈরি করেন, সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক দায়িত্ব প্রদান করেন, নিয়মিত সব কর্মীর কর্মকাণ্ড তদারক করেন, প্রয়োজনীয় উপদেশ দেন এবং একইসঙ্গে দরকারি লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন, অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মসহযোগী ভাবেন এবং তাদের অবদানের সঠিক মূল্যায়ন করেন, ভালো কর্মীদের পুরস্কৃত করেন আর ‘অপদার্থদের’ যথাযথ প্রশিক্ষণ আর ভালোবাসা দিয়ে যোগ্যকর্মী হিসেবে গড়ে তোলেন- কথায় কথায় চাকরিচ্যুতি কিংবা ‘কঠিন ব্যবস্থা’ নেয়ার হুমকি দেন না। নগর ব্যবস্থাপনার মতো দায়িত্ব নিয়ে একজন নগরপিতা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন, তাদের কাছ থেকে সাপোর্ট আদায় করেন, আর বিভিন্ন সংস্থার কর্মকাণ্ডে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করেন। সফল নেতার এসব স্ট্র্যাটেজিক বিষয়কে সামনে রেখে গাজীপুরের নগরপিতাসহ অন্যান্য নগরপিতার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থাপনীয় সুপারিশ রাখছি। সব নগরের উন্নয়নের জন্যই এগুলো প্রযোজ্য বলে মনে করি। প্রথমত, ভিশন সৃষ্টি : নগরপিতার প্রথম কাজ হবে তার নগরের জন্য একটি সুস্পষ্ট ভিশন বা রূপকল্প তৈরি করা। তিনি এমন রূপকল্প চিন্তা করবেন যা থেকে বোঝা যাবে তিনি আগামীতে তার নগরকে কী রূপে দেখতে চান। এ রূপকল্পকে সব ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে সবাই তার রূপকল্পের সঙ্গে মিল রেখে নিজেরাও নিজ নিজ ওয়ার্ডের জন্য নিজস্ব রূপকল্প তৈরি করে নিতে পারেন। অংশীজনদের কাছেও মেয়রের রূপকল্প সহজ ভাষায় তুলে ধরতে হবে।
দ্বিতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি : রূপকল্পের আঙ্গিকে নগরপিতার দ্বিতীয় কাজ হবে সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একটি পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করা। এ পরিকল্পনার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে বছরওয়ারি বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সঠিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব প্রদান করবেন। তবে পরিকল্পনা তৈরির আগে তাকে পুরো নগর এলাকার ‘পরিস্থিতি বিশ্লেষণ’ বা সবলতা, দুর্বলতা, অনুকূলতা ও প্রতিকূলতা শনাক্ত করে জানতে হবে এলাকায় কী কী প্রতিকূল অবস্থা বিদ্যমান; কোথায় কোন্ সমস্যা রয়েছে, সমস্যা কীভাবে তৈরি হয়েছে, সমস্যার ধরন কীরূপ এবং একইসঙ্গে সমস্যার পাশাপাশি জানতে হবে এলাকায় কী কী সুযোগ (অপর্চুনিটি) রয়েছে যার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে উন্নয়নকে গতিময় করা যাবে। সব ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সব অংশীজনের (এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সুশীলসমাজের প্রতিনিধি, সরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিনিধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানগণ ইত্যাদি) অংশগ্রহণে ওয়ার্কশপের আয়োজন করে তাদের মতামত-পরামর্শ খোলা মনে গ্রহণ করে সেই তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা তৈরি করা হলে তা হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবভিত্তিক। মনে রাখা দরকার, প্রত্যেক ওয়ার্ডের ‘পরিস্থিতি’ ভিন্ন ভিন্ন রকম। তাই ওয়ার্ডভিত্তিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ অপরিহার্য।
তৃতীয়ত, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি বাস্তবানুগ বাজেট তৈরি করতে
হবে। বাজেট তৈরির আগে ‘পরিস্থিতি বিশ্লেষণের’ আলোকে অগ্রাধিকার খাতগুলো
নির্ধারণ করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে জিরো বেজড বাজেটিং অ্যাপ্রোচ অনুসরণ করা
হলে ভালো ফল পাওয়া যাবে, পরিকল্পনা বাস্তবভিত্তিক হবে এবং পরিণামে
উন্নয়নের সোনার হরিণ হাতে এসে ধরা দেবে।
চতুর্থত, ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাজকর্ম ভালোভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তাদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা সবাই তরুণ এবং ওয়ার্ড ব্যবস্থাপনায় অধিকাংশই অনভিজ্ঞ। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নগরসংক্রান্ত আইনকানুন, বিধিমালা, প্রবিধান, পলিসি, স্ট্র্যাটেজি এবং বাস্তবায়ন নীতিমালাসহ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা জরুরি। নগর-অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান বিফল হয় কর্মীদের অদক্ষতার কারণে, অর্থের অভাবে নয়।
পঞ্চমত, ‘বাস্তবায়ন পরিকল্পনা’ বা কর্মপরিকল্পনা তৈরি : টার্গেটের ভিত্তিতে কে কোন কাজটি কত সময়ের মধ্যে সম্পাদন করবে, কত পরিমাণ সম্পদের (অর্থ, জনবল, ইকুইপমেন্ট ও অন্যান্য লজিস্টিক) দরকার হবে, কর্মসম্পাদন মনিটরিং-মূল্যায়ন কীভাবে হবে, তদারকি কে কীভাবে করবে, কত সময় অন্তর মেয়রের কাছে কর্ম-প্রতিবেদন জমা দেবে ইত্যাদি বিষয় সুস্পষ্টভাবে নিরূপণ করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা আবশ্যক।
ষষ্ঠত, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। স্বজনপ্রীতি বা তদবিরের মাধ্যমে অযোগ্য কর্মী নিয়োগ দেয়া হলে তারা সব সময় তদবিরের বেড়াজালে নিজেদের আবদ্ধ করে রাখবে, তাদের দিয়ে ভালো কাজ করানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
সপ্তমত, বছরে অন্তত দু’বার অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে অগ্রগতি বিশ্লেষণসহ মতামত ও সুপারিশ গ্রহণ করা হলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এসব কাজে আপাত বিরোধী ব্যক্তিদের বেশি বেশি করে অংশগ্রহণ করাতে হবে, যাতে তারা নেতার ইতিবাচক দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত হয়ে তাদের নেতিবাচক মনোভাব পরিহার করতে পারে। হয়তো বিরোধিতার রাস্তা থেকেও তারা এক সময় সরে যাবে।
অষ্টমত, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হলে নগরের অনেক উন্নয়নমূলক কাজ সুচারুরূপে এবং সঠিক সময়ে সম্পন্ন করানো সম্ভব হবে।
পরিশেষে, মেয়র যদি ‘ব্যতিক্রমী ব্যবস্থাপনা’ পদ্ধতির ব্যবহার করে মূল সমস্যাগুলোকে আলাদা করে প্রথমে শুধু সেগুলোর ওপর জোর দেন এবং কম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোকে ধীরে ধীরে সমাধানের পদক্ষেপ নেন, তাহলে মূল সমস্যাগুলো দূর হওয়ার কারণে অনেক ছোট ছোট সমস্যা এমনিতেই সেরে যাবে। তাছাড়াও তিনি ‘ম্যানেজমেন্ট বাই ওয়ার্কিং অ্যারাউন্ড’ ফিলোসফি গ্রহণ করে যদি মাসিক অন্তত দু’বার নগর এলাকায় ঘুরে ঘুরে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন, তাহলে বহু সমস্যা সৃষ্টির রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। লোকজনও অনুপ্রাণিত হবে। আর যদি তিনি নিজেই নিজের সুপারভাইজার হতে পারেন এবং নিজেই নিজের সমালোচক বনে যান, তাহলে সেটি হবে চমৎকার একটি নজির।
ড. এমএ মাননান : ব্যবস্থাপনাবিদ, কলামিস্ট; উপাচার্য, বাংলাদেশে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
drmannan1950@gmail.com
সেখানকার নাগরিকরাও তাকিয়ে আছেন নতুন মেয়র আর কমিশনারদের দিকে। সবারই একটু
আশা, যদি নতুনরা এসে নগরের বর্তমান জরাজীর্ণ অবস্থার উত্তরণ ঘটিয়ে নতুন রূপ
দিতে পারে। প্রায় সব নগর-মহানগরই পাহাড়সম সমস্যা আর অব্যবস্থাপনার কবলে।
নাগরিকদের প্রশ্ন : এসব থেকে মুক্তি মিলবে কি আদৌ?
গাজীপুরের নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক। নবনির্বাচিত মেয়র
অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম পরাজিত মেয়রের বাড়ি গিয়ে তাকে মিষ্টি খাইয়েছেন,
তার নামে একটি রাস্তার নামকরণ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এটি একটি বিরল উদাহরণ।
নগরবাসীর আশার পিঠে আশা রেখে প্রত্যাশার যে মালা গেঁথেছেন, মনে হয় সে
মালাগাঁথা তাদের সফল হবে।নবনির্বাচিত মেয়র আর কমিশনাররা নিশ্চয়ই জানেন, গাজীপুর শুধু একটি নাম নয়, এ এলাকাটি নিজেই একটি ইতিহাস। ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী আর টাঙ্গাইলকে চার সীমানার আঁচলে বেঁধে গড়ে উঠেছে গাজীপুর, ইতিহাসের জয়দেবপুর। এখানেই ভাওয়ালের গহিন বনাঞ্চল, গৈরিক মৃত্তিকাকোষের টেকটিলার দৃষ্টিনন্দন জনপদ। রাজধানীর সবচেয়ে কাছের নগরটির গুরুত্ব অন্যান্য নগরের চেয়ে বেশি। এখানে রয়েছে বিপুলসংখ্যক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি, বাটা সু কোম্পানির কারখানাসহ অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান আর একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি ও পাঁচটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ২১টি ডিগ্রি কলেজ এবং ৭০টি মাদ্রাসাসহ প্রাথমিক-মাধ্যমিক-কলেজ পর্যায়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এ এলাকাতেই গড়ে উঠছে বাংলাদেশের প্রথম হাইটেক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি। নগরের কাছাকাছি রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, নন্দন পার্ক, ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, বলিয়াদী আর শ্রীফলতলী জমিদারবাড়ি, জাগ্রত চৌরঙ্গী, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক বন্ধুবর হুমায়ূন আহমেদের নুহাশপল্লী আর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমার মাঠ, যেখানে আমরা প্রতি বছর দেখতে পাই মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ, ধর্মানুরাগীদের মিলনমেলা।
কাছাকাছি অবস্থিত দর্শনীয় অনেক স্থান- ভাওয়াল রাজ শ্মশানেশ্বরী, সেন্ট নিকোলাস চার্চ, শৈলাট, রাজা শিশুপালের রাজধানী কপালেশ্বর, একডালা দুর্গ, মীর জুমলার সেতু, সাকাশ্বর স্তম্ভ, প্রাচীন রাজধানী ইদ্রাকপুর, টোক বাদশাহী মসজিদ ইত্যাদি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসেও অবিস্মরণীয় এক নাম গাজীপুর। এখানে ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বর্তমান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খানসহ আরও কয়েকজন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনাপর্বে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধের শুরুটা এ গাজীপুরেই। অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তির পদচারণায় মুখরিত ছিল এ জনপদ : মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, রাজনীতিবিদ শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার, ভাইল ফার্মিয়ন কণার আবিষ্কারক এম জাহিদ হাসান, সাহিত্যিক আবু জাফর শামসুদ্দিন, ভাষাসৈনিক মো. শামসুল হক, এদেশের এককালের সর্বোচ্চ ক্যাথলিক ধর্মীয় নেতা আর্চবিশপ পৌলিনুস ডি কস্তা, কবুতর রেসের প্রবর্তক মনির সরকার প্রমুখ।
এমন একটি বিখ্যাত স্থানের, বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি নগরের দায়িত্বভার নিলেন অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম- নিলেন নিজে নিজে নয়, উৎসবমুখর পরিবেশে ২৬ জুন অনুষ্ঠিত একটি সুশৃঙ্খল নির্বাচনের মাধ্যমে। নাগরিকরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নিঃশঙ্ক চিত্তে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত করেছেন তাদের নগরপিতাকে। জনগণের অনেক আশা-ভরসার ঢালি মাথায় নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন নবনির্বাচিত মেয়র। প্রায় বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট, মৃত ড্রেনেজ সিস্টেম, প্রধান সড়কে সারা দিন-রাত ধরে অসহনীয় যানজট আর সাতান্নটি ওয়ার্ডে জমে থাকা অনেক দুঃখগাথায় জর্জরিত গাজীপুর সিটি এলাকার নেতৃত্বে আসা প্রশাসনিক পরিমণ্ডলে নবাগত নগরপিতার সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। এরকম হাজারও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদেরও।
একজন সফল নেতা মুখে মুখে কথার ফুলঝুরি ছড়ান না, আবেগী হয়ে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেন না, জনবিমুখ হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অন্যের ক্ষতি করে ‘ক্ষমতাশালী’ হওয়ার চেষ্টা করেন না, গদিনশীন হয়ে গদির অমর্যাদা করেন না, চাটুকারবেষ্টিত হয়ে থাকেন না, কারও ব্যাপারে গিবত করে কান ভারি করার সুযোগ কাউকে দেন না।
বরং তিনি দল-মত, শ্রেণী-গোত্র নির্বিশেষে একজন হয়ে সবার চাওয়া-পাওয়াকে মর্যাদা দিয়ে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিকল্পনা তৈরি করেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কর্মীদের সক্ষমতা তৈরি ও বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন, কর্মীদের সঙ্গে কনসালটেশন করে বাস্তবায়নযোগ্য টার্গেট নির্ধারণ করেন, টার্গেট যথাসময়ে অর্জনের লক্ষে ‘বাস্তবায়ন পরিকল্পনা’ তৈরি করেন, সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক দায়িত্ব প্রদান করেন, নিয়মিত সব কর্মীর কর্মকাণ্ড তদারক করেন, প্রয়োজনীয় উপদেশ দেন এবং একইসঙ্গে দরকারি লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন, অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মসহযোগী ভাবেন এবং তাদের অবদানের সঠিক মূল্যায়ন করেন, ভালো কর্মীদের পুরস্কৃত করেন আর ‘অপদার্থদের’ যথাযথ প্রশিক্ষণ আর ভালোবাসা দিয়ে যোগ্যকর্মী হিসেবে গড়ে তোলেন- কথায় কথায় চাকরিচ্যুতি কিংবা ‘কঠিন ব্যবস্থা’ নেয়ার হুমকি দেন না। নগর ব্যবস্থাপনার মতো দায়িত্ব নিয়ে একজন নগরপিতা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন, তাদের কাছ থেকে সাপোর্ট আদায় করেন, আর বিভিন্ন সংস্থার কর্মকাণ্ডে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করেন। সফল নেতার এসব স্ট্র্যাটেজিক বিষয়কে সামনে রেখে গাজীপুরের নগরপিতাসহ অন্যান্য নগরপিতার জন্য কয়েকটি ব্যবস্থাপনীয় সুপারিশ রাখছি। সব নগরের উন্নয়নের জন্যই এগুলো প্রযোজ্য বলে মনে করি। প্রথমত, ভিশন সৃষ্টি : নগরপিতার প্রথম কাজ হবে তার নগরের জন্য একটি সুস্পষ্ট ভিশন বা রূপকল্প তৈরি করা। তিনি এমন রূপকল্প চিন্তা করবেন যা থেকে বোঝা যাবে তিনি আগামীতে তার নগরকে কী রূপে দেখতে চান। এ রূপকল্পকে সব ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে সবাই তার রূপকল্পের সঙ্গে মিল রেখে নিজেরাও নিজ নিজ ওয়ার্ডের জন্য নিজস্ব রূপকল্প তৈরি করে নিতে পারেন। অংশীজনদের কাছেও মেয়রের রূপকল্প সহজ ভাষায় তুলে ধরতে হবে।
দ্বিতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি : রূপকল্পের আঙ্গিকে নগরপিতার দ্বিতীয় কাজ হবে সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে একটি পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করা। এ পরিকল্পনার ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে বছরওয়ারি বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সঠিক ব্যক্তিদের দায়িত্ব প্রদান করবেন। তবে পরিকল্পনা তৈরির আগে তাকে পুরো নগর এলাকার ‘পরিস্থিতি বিশ্লেষণ’ বা সবলতা, দুর্বলতা, অনুকূলতা ও প্রতিকূলতা শনাক্ত করে জানতে হবে এলাকায় কী কী প্রতিকূল অবস্থা বিদ্যমান; কোথায় কোন্ সমস্যা রয়েছে, সমস্যা কীভাবে তৈরি হয়েছে, সমস্যার ধরন কীরূপ এবং একইসঙ্গে সমস্যার পাশাপাশি জানতে হবে এলাকায় কী কী সুযোগ (অপর্চুনিটি) রয়েছে যার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে উন্নয়নকে গতিময় করা যাবে। সব ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সব অংশীজনের (এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সুশীলসমাজের প্রতিনিধি, সরকারি সংস্থাগুলোর প্রতিনিধি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানগণ ইত্যাদি) অংশগ্রহণে ওয়ার্কশপের আয়োজন করে তাদের মতামত-পরামর্শ খোলা মনে গ্রহণ করে সেই তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পনা তৈরি করা হলে তা হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবভিত্তিক। মনে রাখা দরকার, প্রত্যেক ওয়ার্ডের ‘পরিস্থিতি’ ভিন্ন ভিন্ন রকম। তাই ওয়ার্ডভিত্তিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ অপরিহার্য।
চতুর্থত, ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের কাজকর্ম ভালোভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে তাদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা সবাই তরুণ এবং ওয়ার্ড ব্যবস্থাপনায় অধিকাংশই অনভিজ্ঞ। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নগরসংক্রান্ত আইনকানুন, বিধিমালা, প্রবিধান, পলিসি, স্ট্র্যাটেজি এবং বাস্তবায়ন নীতিমালাসহ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা জরুরি। নগর-অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান বিফল হয় কর্মীদের অদক্ষতার কারণে, অর্থের অভাবে নয়।
পঞ্চমত, ‘বাস্তবায়ন পরিকল্পনা’ বা কর্মপরিকল্পনা তৈরি : টার্গেটের ভিত্তিতে কে কোন কাজটি কত সময়ের মধ্যে সম্পাদন করবে, কত পরিমাণ সম্পদের (অর্থ, জনবল, ইকুইপমেন্ট ও অন্যান্য লজিস্টিক) দরকার হবে, কর্মসম্পাদন মনিটরিং-মূল্যায়ন কীভাবে হবে, তদারকি কে কীভাবে করবে, কত সময় অন্তর মেয়রের কাছে কর্ম-প্রতিবেদন জমা দেবে ইত্যাদি বিষয় সুস্পষ্টভাবে নিরূপণ করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা আবশ্যক।
ষষ্ঠত, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। স্বজনপ্রীতি বা তদবিরের মাধ্যমে অযোগ্য কর্মী নিয়োগ দেয়া হলে তারা সব সময় তদবিরের বেড়াজালে নিজেদের আবদ্ধ করে রাখবে, তাদের দিয়ে ভালো কাজ করানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
সপ্তমত, বছরে অন্তত দু’বার অংশীজনদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে অগ্রগতি বিশ্লেষণসহ মতামত ও সুপারিশ গ্রহণ করা হলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এসব কাজে আপাত বিরোধী ব্যক্তিদের বেশি বেশি করে অংশগ্রহণ করাতে হবে, যাতে তারা নেতার ইতিবাচক দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত হয়ে তাদের নেতিবাচক মনোভাব পরিহার করতে পারে। হয়তো বিরোধিতার রাস্তা থেকেও তারা এক সময় সরে যাবে।
অষ্টমত, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হলে নগরের অনেক উন্নয়নমূলক কাজ সুচারুরূপে এবং সঠিক সময়ে সম্পন্ন করানো সম্ভব হবে।
পরিশেষে, মেয়র যদি ‘ব্যতিক্রমী ব্যবস্থাপনা’ পদ্ধতির ব্যবহার করে মূল সমস্যাগুলোকে আলাদা করে প্রথমে শুধু সেগুলোর ওপর জোর দেন এবং কম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোকে ধীরে ধীরে সমাধানের পদক্ষেপ নেন, তাহলে মূল সমস্যাগুলো দূর হওয়ার কারণে অনেক ছোট ছোট সমস্যা এমনিতেই সেরে যাবে। তাছাড়াও তিনি ‘ম্যানেজমেন্ট বাই ওয়ার্কিং অ্যারাউন্ড’ ফিলোসফি গ্রহণ করে যদি মাসিক অন্তত দু’বার নগর এলাকায় ঘুরে ঘুরে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন, তাহলে বহু সমস্যা সৃষ্টির রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। লোকজনও অনুপ্রাণিত হবে। আর যদি তিনি নিজেই নিজের সুপারভাইজার হতে পারেন এবং নিজেই নিজের সমালোচক বনে যান, তাহলে সেটি হবে চমৎকার একটি নজির।
ড. এমএ মাননান : ব্যবস্থাপনাবিদ, কলামিস্ট; উপাচার্য, বাংলাদেশে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
drmannan1950@gmail.com
0 Comments