চুমকি চলেছে একা পথে, সঙ্গী হলে দোষ কী তাতে...’। চুমকির সঙ্গে পরিচয় সূত্রে সম্মতি সাপেক্ষে চলার সঙ্গী হলে হয়তো দোষের কিছু নেই। কিন্তু চুমকিকে একা পেয়ে উত্ত্যক্ত করে সঙ্গী হতে গেলে কিন্তু অপরাধী হতে হবে। কারণ যেকোনো স্থানে কোনো নারীকে টিজ বা উক্ত্যক্ত করা অপরাধ। এমনকি যৌন হয়রানি হিসেবেও গণ্য হতে পারে। অক্সফোর্ডসহ বিভিন্ন অভিধানে ইভ টিজিংকে যৌন আচরণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমাদের দেশের আইনে জনসমক্ষে হোক বা নির্জনে কেউ উত্ত্যক্ত করলে দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।
আইনের আশ্রয় নিতে সংকোচ নয়
ইভ টিজিং বা কোনো ধরনের উত্ত্যক্ততার শিকার হলে সংকোচ করা উচিত নয়। আইনের আশ্রয় নেওয়া উচিত, কারণ আইনের আশ্রয় নেওয়া মানে হচ্ছে এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করা এবং আইনিভাবে প্রতিকার চাওয়া। কেউ ইভ টিজিংয়ের শিকার হলে কাছের থানায় গিয়ে জানানো উচিত। লিখিত অভিযোগও করা যেতে পারে। যদি উত্ত্যক্তকারী পরিচিত কেউ হয়, তাহলে তার নাম-ঠিকানা জানা থাকলে উল্লেখ করতে হবে। কেউ ইভ টিজিংয়ের শিকার হয় বা হচ্ছে, এমন কোনো ঘটনা দেখলে যদি আশপাশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়, ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সঙ্গে সঙ্গে অবগত করা উচিত। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ কাউকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে কিন্তু ফল উল্টো হতে পারে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি হেল্পলাইন রয়েছে, যার নম্বর ১০৯। এই নম্বরে ফোন করে ইভ টিজিং-সংক্রান্ত অভিযোগ করা যায়। এই কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টাই জন্য খোলা থাকে।
শাস্তি
দণ্ডবিধির ২৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি অন্যদের বিরক্তি সৃষ্টি করে কোনো প্রকাশ্য স্থানের কাছাকাছি কোনো অশ্লীল কাজ করে অথবা প্রকাশ্য স্থানে কোনো অশ্লীল গান, সংগীত বা পদাবলি গায়, আবৃত্তি করে বা উচ্চারণ করে; সেই ব্যক্তি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।
দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় বলা আছে, কেউ কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কথা, অঙ্গভঙ্গি বা কোনো কাজ করে, তাহলে দায়ী ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সাজা বা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ৭৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বা সেখান থেকে দৃষ্টিগোচরে স্বেচ্ছায় এবং অশালীনভাবে নিজের শরীর এমনভাবে প্রদর্শন করে, যা কোনো গৃহ বা দালানের ভেতর থেকে হোক বা না হোক কোনো নারী দেখতে পায় বা স্বেচ্ছায় কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে কোনো নারীকে পীড়ন করে বা তার পথ রোধ করে বা কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে, অশ্লীল আওয়াজ, অঙ্গভঙ্গি বা মন্তব্য করে নারীকে অপমান বা বিরক্ত করে, তবে সেই ব্যক্তি এক বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ডে অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে যৌনাঙ্গ বা অন্য কোনো অঙ্গ স্পর্শ করে এবং শ্লীলতাহানি করা হলে অনধিক ১০ বছর কিন্তু ন্যূনতম তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। এ ছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ইভ টিজিং একটি যৌন নির্যাতন হিসেবেও গণ্য হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ দুই বছর সাজা দিতে পারেন। কোনো নারীকে বিরক্ত করার জন্য ভিডিও বা ছবি তুলে কোনো অনলাইনে প্রকাশ করলে সাইবার অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতে পারে, যার শাস্তি কমপক্ষেÿ সাত বছরের জেল এবং জরিমানা।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
আইনের আশ্রয় নিতে সংকোচ নয়
ইভ টিজিং বা কোনো ধরনের উত্ত্যক্ততার শিকার হলে সংকোচ করা উচিত নয়। আইনের আশ্রয় নেওয়া উচিত, কারণ আইনের আশ্রয় নেওয়া মানে হচ্ছে এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করা এবং আইনিভাবে প্রতিকার চাওয়া। কেউ ইভ টিজিংয়ের শিকার হলে কাছের থানায় গিয়ে জানানো উচিত। লিখিত অভিযোগও করা যেতে পারে। যদি উত্ত্যক্তকারী পরিচিত কেউ হয়, তাহলে তার নাম-ঠিকানা জানা থাকলে উল্লেখ করতে হবে। কেউ ইভ টিজিংয়ের শিকার হয় বা হচ্ছে, এমন কোনো ঘটনা দেখলে যদি আশপাশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়, ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সঙ্গে সঙ্গে অবগত করা উচিত। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ কাউকে ফাঁসানোর চেষ্টা করলে কিন্তু ফল উল্টো হতে পারে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি হেল্পলাইন রয়েছে, যার নম্বর ১০৯। এই নম্বরে ফোন করে ইভ টিজিং-সংক্রান্ত অভিযোগ করা যায়। এই কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টাই জন্য খোলা থাকে।
শাস্তি
দণ্ডবিধির ২৯৪ ধারায় বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি অন্যদের বিরক্তি সৃষ্টি করে কোনো প্রকাশ্য স্থানের কাছাকাছি কোনো অশ্লীল কাজ করে অথবা প্রকাশ্য স্থানে কোনো অশ্লীল গান, সংগীত বা পদাবলি গায়, আবৃত্তি করে বা উচ্চারণ করে; সেই ব্যক্তি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।
দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় বলা আছে, কেউ কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কথা, অঙ্গভঙ্গি বা কোনো কাজ করে, তাহলে দায়ী ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সাজা বা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশের ৭৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কেউ রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বা সেখান থেকে দৃষ্টিগোচরে স্বেচ্ছায় এবং অশালীনভাবে নিজের শরীর এমনভাবে প্রদর্শন করে, যা কোনো গৃহ বা দালানের ভেতর থেকে হোক বা না হোক কোনো নারী দেখতে পায় বা স্বেচ্ছায় কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে কোনো নারীকে পীড়ন করে বা তার পথ রোধ করে বা কোনো রাস্তায় বা সাধারণের ব্যবহার্য স্থানে অশালীন ভাষা ব্যবহার করে, অশ্লীল আওয়াজ, অঙ্গভঙ্গি বা মন্তব্য করে নারীকে অপমান বা বিরক্ত করে, তবে সেই ব্যক্তি এক বছর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদণ্ডে অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে যৌনাঙ্গ বা অন্য কোনো অঙ্গ স্পর্শ করে এবং শ্লীলতাহানি করা হলে অনধিক ১০ বছর কিন্তু ন্যূনতম তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে। এ ছাড়া হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ইভ টিজিং একটি যৌন নির্যাতন হিসেবেও গণ্য হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ দুই বছর সাজা দিতে পারেন। কোনো নারীকে বিরক্ত করার জন্য ভিডিও বা ছবি তুলে কোনো অনলাইনে প্রকাশ করলে সাইবার অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতে পারে, যার শাস্তি কমপক্ষেÿ সাত বছরের জেল এবং জরিমানা।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
0 Comments