যে কোন উদ্যোগই বাংলাদেশে জন্য স্টার্টআপ নয়, সেটার সঙ্গে আইটির কোন যোগাযোগ থাকলেই সেটাকে স্টার্টআপ বলা যায় না।আবার আইটির সাথে যোগাযোগ না হলেও কিন্তু স্টার্টআপ উদ্যোগ ও আছে। তবে, সব উদ্যোগই ব্যবসা নয় এবং সব ব্যবসায়িক উদ্যোগ যে স্টার্টআপ নয় সেটা জানা কথা। বাংলাদেশে স্টার্টআপকে ঘিরে আমাদের এক ধরণের স্বপ্ন আছে, এটা সত্য। আমরা এখানে স্টার্টআপের একটা সংস্কৃতি গড়ে তোলার কথা বলছি অনেকদিন ধরে। আমাদের উদ্যোক্তাদের হাড়-মাংস এককরে লড়াই করার কথা আমাদের সবার জানা।
আমি বিভিন্ন স্টার্টআপ নিয়ে লেখা আর্টিকেল খুব মনোযোগ দিয়েই পড়ি। স্টার্টআপ নিয়ে লেখা আর্টিকেলগৈুলো পড়তে ভালো লাগে আমার খুব। অনেক গুছিয়ে লেখা আর্টিকেলে এ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন সবাই, নিজের স্টাডিকে কেন্দ্র করে। কিন্তু আমার একটি প্রশ্ন হলো - “বিশ্ব স্টার্টআপ ম্যাপে বাংলাদেশর নাম নাই। ব্যাপারটা আমাদের জন্য দুঃখের হলেও এটি কঠিন বাস্তবতা। স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম হিসেবে গণ্য হতে হলে বেশকিছু কাজ করা দরকার। আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে স্টার্টআপবান্ধব করতে হবে।
১. ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডে ম্যাচিং ফান্ড ও সরাসরি স্টার্টআপকে অর্থায়ন করে এটি করা যায়। তেল আবিব, সিঙ্গাপুর, সান্টিয়াগো এ কৌশল প্রয়োগ করে, বিশেষ করে ইকোসিস্টেমের প্রাথমিক পর্যায়ে ভালো সুফল পেয়েছে।
২. বৈদেশিক বিনিয়োগ ও বৈদেশিক মেধা দেশে আসার পথ সুগম ও ঝামেলাবিহীন করা।
৩. স্টার্টআপের জন্য নিয়মনীতি শিথিল করতে হবে, যাতে তাদের নিবন্ধন, দেউলিয়া, শেয়ার হস্তান্তর, এক্সিট ও কোম্পানি বন্ধ করা সহজ ও সাবলীল হয়।
৪. ইকোসিস্টেমটির অনন্যতা চিহ্নিত করা। এটি সেক্টরভিত্তিক বা স্টার্টআপের বয়সভিত্তিক হতে পারে। যেমন লস অ্যাঞ্জেলস মিডিয়ার জন্য বোস্টন জীবন্ত বিজ্ঞানের জন্য বিখ্যাত।
৫. বিভিন্ন আইন-কানুন বা পলিসি স্টার্টবান্ধব করে সাজাতে হবে। সবকিছু দেখতে হবে ‘স্টার্টআপ চক্ষু দিয়ে’।
৬. নতুন উদ্যোক্তাদের প্রতিভার ওপর বাজি ধরার মতো বড় কলিজার বিনিয়োগকারী, যারা একটা আইডিয়ার ১০-১৫ কোটি টাকা বা একটি পণ্য পরীক্ষা পর্যায়ের কোম্পানিকে ১০০-১৫০ কোটি টাকা মূল্যায়ন করতে পারবে।”
স্টার্টআপের বেলায়ও আমার একথাটা মনে হয়। আমাদের যে সমস্যা তার উদ্ভাবনী সমাধান দিয়ে নানান উদ্যোগ গড়ে উঠতে পারে। সেগুলোর জন্য একটা স্টার্টআপ সংস্কৃতি আমরা বানানোর চেষ্টা করি। আমাদের হাই-গ্রোথের পাশাপাশি কনস্ট্যান্ট গ্রোথের দিকেও নজর দেওয়ার দরকার। সে হিসাবে আমি বলি একটা উদ্যোক্তা বান্ধব পরিবেশ আমরা গড়ে তুলতে পারলে হয়। সেটা বরং অন্যদের ডেকে আনার চেয়ে ভাল হতে পারে।
আর এ কাজের অনেকগুলো পর্যায় মনে হয় আমরা নিজেরাই করে ফেলতে পারি। অন্তত চেষ্টা করা যেতে পারে।
0 Comments