সফল স্টার্টআপ গড়ার ২১ টি কার্যকরী টিপস।




তরুণ উদ্যোক্তাদের সিংহভাগই প্রচন্ড উদ্যম নিয়ে স্টার্টআপ শুরু করেন। তারপর কিছুদিনের মধ্যেই বেলুনের সূক্ষ্ম গোপন ছিদ্র দিয়ে সব প্রেরণা উড়ে গিয়ে চুপসে যান। সমস্ত পুঁজি খুইয়ে প্রচন্ড হতাশা নিয়ে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসেন। অধিকাংশ তরুণ উদ্যোক্তার প্রথম স্টার্টআপের দশা এমনই হয়। সময়ের সাথে নিজেকে তৈরী করুন আত্মবিশ্বাসী, ধৈর্য্যশীল, উদ্যোমী, আর পরিশ্রমী হিসেবে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক সফল স্টার্টআপ গড়ার ২১ টি কার্যকরী টিপস।

১. আপনার স্টার্টআপ কি ধরণের? স্টার্টআপ সম্পর্কে আপনার কি কোন ধারণা আছে এবং কয়টি স্টার্টআপ আপনি চিনেন?

২. নেটওয়ার্ক তৈরি করুন আপনার কাজের সম্পর্কিত মানুষের। আপনার স্টার্টআপ ঘরনার কমিউনিটিতে যান। স্টার্টআপ কেন্দ্রিক সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং ইভেন্টে অংশগ্রহণ করুন।

৩. কিছু স্টার্টআপ এর খবর বের করুন যাদের আইডিয়া আপনার ভালো লাগে। তারা কিভাবে তাদের সময়গুলো নিয়ে চেষ্টা করছে তা কি জানেন?

৪. আপনার আইডিয়া আসলে কি? কতদিন ধরে স্টার্টআপ করার চিন্তা করছেন?

৫. স্টার্টআপ শুরু করার মতন যথেষ্ট টাকা কি আপনার আছে? অর্থ কয়েক ভাগে ভাগ করুন। যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন। সেজন্য সঞ্চয় করুন।

৬. স্টার্টআপ করার মত কেমন দক্ষতা এ মুহূর্তে আপনার আছে? আর তা না থাকলে কোথায় থেকে স্টার্টআপ স্কিলগুলো শিখতে পারবেন তা খুজে বের করুন। এরপর আনুমানিক কতদিন সময় লাগবে শেখার জন্যে সেটার টার্গেট নির্ধারণ করুন।

৭. নিজে করবেন নাকি পার্টনার বা কো-ফাউন্ডার নিয়ে করবেন? আর পার্টনার/কো-ফাউন্ডার নিয়ে করলে কে কোন দিক নিয়ে থাকবেন তা ঠিক করুন। পার্টনার বাছাইয়ে তড়িঘড়ি না করে যথেষ্ট সময় নিন এবং সচেতন হোন।

৮. কোন সময় কি কাজ করবেন তা নির্ধারণ করুন। যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ নেই তা নিয়ে কাজ করার দরকার নেই। কাজ বিভিন্নভাবে করার দক্ষতা অর্জন করুন এবং সময়ের গুরুত্ব দিন কারণ টাইম মেনেজমেন্ট অত্যাবশ্যকীয় গুরুত্বপূর্ণ।

৯. নিজেকে প্রথমে জানুন। আপনি আসলে কোন কাজ ভালো পারেন। যদি আপনার কোন দক্ষতা না থাকে যে স্টার্টআপ আপনি করতে চান তার ব্যাপারে, তাহলে তা সম্পর্কে নির্দিষ্ট সময় নিয়ে জানুন। যদি কয়েক মাস পরেও আপনার আগ্রহ আগের মতন থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনি কাজটি ভালোবাসতে শুরু করেছেন এবং তা নিয়ে আরও চেষ্টা করতে থাকুন। তারপর একদিন আপনার স্বপ্নের আইডিয়া নিয়ে ছোট করে স্টার্টআপ শুরু করে দিন।

১০. নিজেকে নিজে সাপোর্ট করতে শিখুন। কেউ সাপোর্ট করবেনা এরকম একটা চিন্তা নিজের মাঝে রাখুন। তাহলে নিজে কখনও মন খারাপ করবেন না। চ্যালেঞ্জিং সময়ে যখন মানুষ আপনার পাশে আর পাবেন না সে সময় নিজের কাজের প্রতি আগ্রহ হারাবেন না। মনের জোর তৈরি করুন কারণ সেল্ফ মোটিভেশন হচ্ছে সবচেয়ে বড় মোটিভেশন। এ বিষয়ে অনেকেই গুরুত্ব দেন না। বেশিরভাগ সময় এর অভাবে মানুষ হতাশ হয়ে পড়ে আর তার ফলে সামনে আর এগিয়ে যেতে পারেনা।

১১. আপনার আইডিয়া আরও উন্নত করার চেষ্টা করুন। রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্টে ঠিক করে সময় দিন। নিজে করতে না পারলে টিম মেম্বারদের দিয়ে করান। টিম মেম্বাররাও ঠিকমত না পারলে কনসালটেন্সি কোম্পানির কাছ থেকে করিয়ে নিন কারণ আপনার আইডিয়াটিকে সফল স্টার্টআপে পরিণত করতে হলে অবশ্যই তা মার্কেট গ্যাপ ফিট করার মত হতে হবে।

১২. জীবনে অনেক কিছুই প্রথমবার করতে হয় । তাই তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না । যা করতে পারেননি তা নিয়ে কষ্ট পাবেন না । কেন পারেননি তার কারণ বের করুন । নিজের ভুল খুঁজে বের করুন। নিজেকে জানুন, বুঝুন এবং নিজেকে প্রতিনিয়ত আপডেট করুন।

১৩. কিভাবে প্রোমোশন, মার্কেটিং ও বিক্রয় করবেন তার চিন্তা করুন এবং সেই অনুযায়ী প্ল্যান/পরিকল্পনা তৈরি করুন। বড় চ্যালেঞ্জ নিন এবং দুর্বার গতিতে পরিকল্পনা ধরে আগাবেন।

১৪. স্টার্টআপ শুরু করার পর তা সুন্দর করে ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। সেজন্য পূর্নাঙ্গ একটি বিজনেস প্ল্যান তৈরি করুন কতদিন পর আয় করতে পারবেন, কত ইনভেস্টমেন্ট দরকার এবং কত সময় আপনাকে পার করা প্রয়োজন ব্রেক ইভেনে যাওয়ার জন্য।

১৫. চারপাশ ঘুরুন, বই পড়ুন এবং আইডিয়া বের করুন। সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করুন। কারণ সমস্যা গুলো স্টার্টআপ আইডিয়া পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় এবং যত বড় সমস্যা, তত বড় স্টার্টআপ করার সম্ভাবনা। মানুষের জীবনী পড়ুন। কেন কি জন্যে অনেক কিছু করা হয়নি তা পড়ুন।

১৬. সুযোগ নিজে তৈরি করুন। সুযোগের জন্যে অপেক্ষা করে থাকবেন না।

১৭. আপনার নূন্যতম একজন মেন্টর থাকা আবশ্যক স্টার্টআপের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও গাইডলাইনের জন্য। থাকলে অনেক ভালো হয় এবং সঠিক পথে থাকা যায়।

১৮. মানুষের প্রয়োজন সম্পর্কে জানুন। মানুষের পছন্দ মুল্য দিন। যিনি আপনার প্রোডাক্ট কিনবেন মানে কাস্টোমার/ক্লাইন্ট, তাদের প্রতি গুরুত্ব দিবেন। তারপর তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রোডাক্ট ডেভেলপ করুন।

১৯. আপনার কাজের ডিজাইন তৈরি করুন এবং কোম্পানি মডেল তৈরি করুন। কাদের নিয়ে কাজ করবেন ঠিক করুন। নির্দিষ্ট লং-টার্ম মিশন ভিশন ড্রিভেন কোম্পানি বানানোর চেষ্টা করুন।

২০. স্টার্টআপ করতে হলে উদ্যোক্তার মধ্যে অন্যান্য স্কিলের পাশাপাশি লিডারশীপ স্কিল থাকা বাধ্যতামূলক, তানাহলে আপনার টিমকে মোটিভেটেড রাখতে পারবেন না। নিজে মোটিভেটেড থাকুন, অন্যদেরও মোটিভেটেড রাখুন।

২১. কে কি বলবে তা না চিন্তা করে আপনি আপনার স্টার্টআপ নিয়ে কাজ করে যান । সফল হলে সবাই  আপনাপ পক্ষ নিয়ে কথা বলবে।

সূত্র: উদ্দোক্তাগিরি

Post a Comment

0 Comments