নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে শুরু হবে বাণিজ্য মেলা। এই মেলায় দেশি-বিদেশি কয়েক শ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য চুক্তিভিত্তিক কিছু কর্মী নিয়োগ করে থাকে। সাধারণত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বাণিজ্য মেলায় খণ্ডকালীন এই কাজের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাণিজ্য মেলায় এক মাসের কাজের জন্য তেমন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। তবে অভিজ্ঞতা থাকলে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে তা বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয়।
মেলায় চাকরির সুযোগ প্রসঙ্গে এসকোয়্যার ইলেকট্রনিকস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ বিভাগ) ফজলে ফারাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘উদ্যমী, পরিশ্রমী, সহজ-সাবলীল উপস্থাপনা, সুন্দর বাচনভঙ্গি, ইংরেজিতে দক্ষতা, সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ, আত্মবিশ্বাসী তরুণ-তরুণীদের আমরা সাধারণত নিয়োগ দিয়ে থাকি। একজন কর্মীকে সাধারণত কমবেশি ২০ হাজার টাকা বেতনসহ বাড়তি কিছু সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠান কাউকে যোগ্য মনে করলে স্থায়ীভাবে নিয়োগও দিতে পারে।’
খোঁজ-খবর
বাণিজ্য মেলায় কাজ পেতে হলে মেলা শুরুর আগে থেকেই খোঁজখবর রাখতে হবে। মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও আবশ্যক। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মেলায় খণ্ডকালীন চাকরির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দিয়ে থাকে। তাই আগ্রহীরা নিয়মিত চোখ রাখুন দৈনিক পত্রিকার চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে।
বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী রাজ বিশ্বাস দৈনিক পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে মেলায় খণ্ডকালীন চাকরির আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করলাম। এরপর রীতিমতো লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় টিকে চাকরি জুটেছিল। এরপর আরও দুই বছর ওই প্রতিষ্ঠানের হয়ে মেলায় চাকরি করেছি। পরের দুবার কোনো পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে গত বছর মেলায় চাকরির আবেদন করেছিলেন কল্যাণপুরের হোজায়ফা সাকওয়ান। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে নিয়মিত থাকা হয়। হঠাৎ একটা লিংকে বাণিজ্য মেলায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখলাম। অনেকটা খেয়ালের বসে আবেদন করলাম। মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাক এল। এরপর পরীক্ষায় টিকে পেয়ে গেলাম জীবনের প্রথম চাকরি।’
তাই চাকরিপ্রার্থীরা এ সময় চোখ রাখুন অনলাইনে। চাকরির খোঁজখবর দেয় এমন সব ফেসবুক গ্রুপে সহজেই পেতে পারেন বাণিজ্য মেলার চাকরির বিজ্ঞাপন।
সুযোগ-সুবিধা
মেলায় খণ্ডকালীন চাকরির জন্য একেক প্রতিষ্ঠান একেক অঙ্কের সম্মানী দিয়ে থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণত ১২ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত সম্মানী দেওয়া হয়। এর বাইরে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান সকাল ও দুপুরের খাবারসহ বাড়তি কিছু সুযোগ-সুবিধা দেয়। এক মাসের কাজের অভিজ্ঞতা সনদও দেওয়া হয়।
এই অভিজ্ঞতা শিক্ষাজীবন শেষ করার পর কর্মজীবনে বেশ কাজে লাগে। এ প্রসঙ্গে বর্তমানে একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিপণন বিভাগে কর্মরত ওয়াসিউর রহমান বলেন, ‘বাণিজ্য মেলায় টানা দুই বছর কাজ করেছি। সেই সূত্রে আমি বিপণন নির্বাহীর চাকরিটা পেয়েছি। মেলায় কাজের অভিজ্ঞতা আমাকে আত্মবিশ্বাসী করেছে। ইতিবাচক মানসিকতা ও দৃঢ়তার সঙ্গে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার শিক্ষাও মেলার মাঠে হাতে-কলমে পেয়েছি।’
লেখাটি প্রথম আলো থেকে নেওয়া..
0 Comments