উদ্যোক্তা হতে হলে স্বাধীন চেতা উদ্যমী মনোভাব থাকতে হবে। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন এবং উন্নয়নশীল দেশ কিন্তুু এখনো আমাদের দেশে দারিদ্রের হার কমেনি !! বেকারত্ব বেড়েই চলছে...
শিক্ষা ও অর্থনীতির কারণেই আমরা সামনে অগ্রসর হতে পারিনি। শিক্ষার হার যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বেকারত্বের সংখ্যাও সেভাবে বেড়ে চলছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দীতায় মুখোমুখি আজকের তরুন সমাজ চাকরির জন্য যতটা কঠোর পরিশ্রম করছে নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ততটা করছে না।
চাকুরি পেতে লাখ লাক টাকার আর রেফারেন্স লাগছে অনেক ক্ষেত্রে!একজন উদ্যোক্তা হতে গেলে লাখ লাখ টাকা আর রেফারেন্স দরকার নেই। আত্মবিশ্বাস থাকলেই সম্ভব সফল উদ্যোক্তা হওয়া।
কারণ আল্লাহ প্রত্যেক মানুষকে যে মস্তিষ্ক দিয়েছে বিজ্ঞানীগণ বলেন এই মেধা বা মস্তিষ্ক অনেক বড় মুলধন,এই মস্তিষ্ককে সুষ্ঠু ভাবে মূলধন হিসেবে কাজে লাগিয়ে আপনি উদ্যোক্তা হতে পারেন সহজেই।
উদ্যোক্তা হতে হলে কি কি বিষয় জানা থাকতে হবে..
পূর্ব পরিকল্পনা : পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজে সহজেই সাফল্য আসে না।শুধু ব্যবসা নয় যে কোন কাজের ক্ষেত্রেই পূর্ব পরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত আপনি কি ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে ব্যবসা করবেন, কোথায় করবেন, কিভাবে শুরু করবেন? ইত্যাদি পরিকল্পনা করে এগুতে হবে।
সঠিক জায়গা বা স্থান নির্বাচন: ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে জায়গা নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি জায়গা যেটা কমার্শীয়াল যেখানে মানুষ জন চাকরী করা অথবা লোকাল বাজার বা পাড়া যেখানে মানুষ থাকে সবসময় বড় বাজার, দৈনিক বাজার এই রকম জায়গা নির্বাচন করতে হবে।এ ছাড়া আশে পাশের এলাকায় আপনার ব্যবসায়িক পণ্যের চাহিদা আছে কিনা তাও খেয়াল রাখতে হবে।
নতুন ব্যাবসা কিভাবে শুরু করবেন: ব্যবসায় আপনার পরিশ্রম কে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে আপনি হয়ে উঠবেন একজন সফল ব্যবসায়ী। সঠিক পরিকল্পনা আপনি যদি দোকান দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার পন্য গুলো সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখুন,যাতে কাষ্টমার ভালো ভাবে দেখতে পায়। ব্যবসা শুরু করলেও সাথে সাথে সফলতার মুখ নাও দেখতে পারেন। একটি ছোট ব্যবসার মালিক হিসাবে বাজারে আপনার ব্যবসাকে প্রসারিত করার জন্য প্রাথমিক এবং ছোট কিছু স্মার্ট উপায় খুজে বের করুন।
উন্নত গ্রাহক সেবা: উন্নত সেবা মানে গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সেবা গ্রাহক যখন যেটা চায় তখন তাকে সেইটা দিতে হবে, সব ধরনের পন্য রাখতে হবে এবং ভাল মানের হতে হবে।আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা আমরা গ্রাহক সেবার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে। আমরা গ্রাহক দের কে তাদের চাহিদা মত সাপোর্ট দিতে পারি না। এভাবে মার্কেটে ব্যবসায় টিকিয়ে রাখা সম্বভ নয়। আপনার ব্যবসা বৃদ্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল আপনি যা করেন তাতে সবচেয়ে ভাল দিক গুলো খুজে বের করা। এবং আপনার কাজের উপর শতভাগ আত্মবিশ্বাস থাকা। আগামী বছরের জন্য উন্নত গ্রাহক সেবা লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, এবং দেখুন আপনার লক্ষ্যে কি কি সমস্যা থাকতে পারে, এবং সেগুলো নির্বাচন করে ঠিক করা।
সৎ থাকা: Honesty is the best policy. হ্যাঁ "সততাঁ সর্ব উৎকৃষ্ঠ পন্থা" সেই পলিসিকেই এখানে কাজে লাগাতে হবে। কারণ ব্যবসার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ব্যবসায়ী হতে হলে সৎ, নিষ্ঠাবান হতে হবে এবং লোভ-লালসা থেকে দূরে থাকতে হবে। কোন কাষ্টমারের সাথে প্রতারণা করবেন তো সে আর কখনো আপনার কাছে আসবে না। বিশ্বাস এবং সততা ব্যবসার মূল ভিত্তি, । প্রতারণা ও ধোকাবাজি শয়তানের কাজ। এ ছাড়া ক্রেতা ঠকিয়ে যত উপার্জন করবেন সবই হারাম হিসেবে বিবেচিত হবে।
নতুন কিছু নিয়ে শুরু করুন: ব্যতিক্রমী পন্য দিয়ে সেবা যোগ করুন যা আপনার বিদ্যমান সেবার পরিপূরক। বর্তমানে অনেক ব্যবসাই বহুল প্রচলিত। এমন কিছু রাখুন যার চাহিদা আছে কিন্তুু পাওয়া দূর্লব। আপনার পছন্দের জায়গায় একই রকম বিভিন্ন দোকানে ভরপুর, এ রকম হলে ব্যবসার হাল খুজে পাবেন না। তাই এমন ব্যবসা ব্যতিক্রমি কিন্তুু লাভজনক।
সবার নিকট গ্রহণযোগ্য হওয়া: এখনকার সময়ে আপনার ব্যবসাকে সার্বজনীন করা বা সবার কাছে ব্যবসা কে পৌছানো খুবই সহজ। বিশেষ করে যদি আপনি একটি ফ্রিল্যান্স ব্যবসা চালানো বা কোন সার্ভিস এর অফার দেন। বিশ্ব বাজারের শাখা বিন্যাস এর মাধ্যমে আপনি নতুন সুযোগ নিয়ে আসতে পারেন এবং বাড়িতে বসেই অল্প সময়েই আপনি আপনার ব্যবসাকে দক্ষতার সাথে আগিয়ে নিতে পারেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত এক্টিভ: আপনাকে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক দিক নির্নয় করে সবার সাথে সৌহার্দপূর্ন ব্যবহার এবং সম্পর্ক রাখতে হবে।
পাশাপাশি আপনাকে সামাজিক যোগাযোগ সাইট গুলোতে এক্টিভ থাকতে হবে। যেমন আপনি কোন সার্ভিস এর অফার করলেন বা আপনার কোন পন্যর জন্য মার্কেটিং করলেন এখন কোন ক্লাইন্ট আপনাকে সার্ভিস এর জন্য বা পন্য কেনার জন্য নক দিল আপনাকে পেলনা । তখন সে আপনার রিপ্লাই এর জন্য অপেক্ষা করবে না। এ জন্য নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করুন।
তাড়াহুড়া না করা: এক লাপে কেও কখনো গাছের মগডালে উঠতে পারে না,আস্তে আস্তে উঠতে হয়।
ধৈর্য্য না থাকলে ব্যবসায়ে উন্নতি করা সম্ভব নয়। আজ ব্যবসা শুরু করবেন আর ২থেকে ৩ দিন পর কোটিপতি! এই রকম আশা নিয়ে ব্যবসা শুরু করা ঠিক নয়। অনেকই আছেন অল্পতই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ না হয়ে ধৈর্য্যের সাথে সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ধীরে ধীরে এগুতে হবে,সাফল্য আসবে।
আত্মবিশ্বাসী হতে হবে: সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আত্মবিশ্বাসী মনোভাব থাকতে হবে। যার আত্মবিশ্বাস যত বেশি তার সাফল্য তত বেশি। যদিও এটি অর্জন করা কঠিন। আপনাকে ব্যবসা সংগঠনের ক্ষেত্রে সাহসি এবং আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।
0 Comments