সফল ক্যারিয়ার গঠনে করণীয়

মানুষের শিক্ষা বা জ্ঞানার্জন সবকিছুর মূলে একটাই লক্ষ্য থাকে তা হলো সফল ক্যারিয়ার। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি যে যত বেশী বাস্তব জ্ঞানের সাথে নিজেকে সমন্বয় করতে সক্ষম হবেন তিনি তত বেশি প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবেন।
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে মানুষ নিজেকে সফল করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হয়। ক্যারিয়ারের লক্ষ্য শুধু একটা ভালো চাকুরি পাওয়া নয় বরং নিজের মেধা ও যোগ্যতার বিকাশ ঘটিয়ে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এতে আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্যের কর্মসংস্থান ও সৃষ্টি হয়। এছাড়া মানবতার সেবায় ব্রতী হওয়াও ক্যারিয়ারের লক্ষ্য হতে পারে।
সফল ক্যারিয়ারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস্ঃ
লক্ষ্য নির্ধারণ
প্রথমেই আপনার ক্যারিয়ারের লক্ষ্যকে ভাগ করে নিন। স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য: আগামী এক বছরে আপনি কী করবেন। মধ্যমেয়াদী লক্ষ্য: আগামী পাঁচ বছরে আপনি কী করবেন। দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য: আগামী দশ বছরে আপনি কী করবেন। এরপর  নিয়মিত আপনার কাজগুলো পর্যালোচনা করুন, মিলিয়ে নিন যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে হচ্ছে কী না, কোন সমস্যা আছে কিনা তা খুঁজে বের করুন এবং তা সমাধানের কার্যকর প্রদক্ষেপ নিন। সবশেষে নির্ধারিত লক্ষ্যের অগ্রগতি পরিমাপ করুন। 
দৃষ্টি নিবন্ধন
যেকোন শারীরিক বা মানসিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও চেষ্টা করুন আপনার দৃষ্টিকে নিবন্ধ করতে। এক্ষেত্রে অনাহুত আগত সকল সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতাকে গুরুত্বহীন মনে করুন। স্থির লক্ষ্যে সবসময় ফোকাসড থেকে কাজের প্রতি মনোনিবেশ করুন।
দক্ষতা অর্জন
নজর দিন নিজের অর্জিত এবং অর্জিতব্য দক্ষতার প্রতি। যত পারেন নিজের জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বাড়ান, ইন্টারনেটে ই-বুকস অথবা ঘরে বসে বিভিন্ন বই পড়ুন এবং প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে চেষ্টা করুন। এতে করে অন্যের চেয়ে আপনার কর্মদক্ষতা বহুগুণে বেড়ে যাবে, যা এক সময় সাফল্য নিয়ে আসবে।
কর্ম পরিকল্পনা
নিজের কর্ম পরিকল্পনায় জোরালোভাবে মনোনিবেশ করুন। সারাদিনের কাজের পরিকল্পনা তৈরি করে নিন, কোন কাজ কখন করবেন তা ঠিন করুন এবং অবশ্যই সময়মতো কাজ শেষ করুন। এর মাধ্যমে প্রতিটি কাজ প্রয়োজন অনুসানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে, যা আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সামাজিক মন
নিজের মনকে যতটা সম্ভব সামাজিক করুন, মানুষের সাথে মিশুন। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করুন। সামাজিক অনুষ্ঠানে নিজের উপস্থিতি বাড়ান এবং একটি কার্যকর সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরি করুন। এতে সমাজের উপর আপনার আবেদন ও গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হবে, যা সফলতায় কাজে লাগবে।
চ্যালেঞ্জ গ্রহণ
যেকোন চ্যালেঞ্জ গ্রহণে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। নতুন নতুন কাজে নিজেকে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। সম্ভাবনাময় নতুন পরিবেশে ঝাঁপিয়ে পড়ুন, নিজের আত্মবিশ্বাস ও যোগ্যতা প্রমাণ করুন। ফলে আপনি এমন কিছু কাজে এগিয়ে যাবেন, যার ফলাফল মিষ্টতায় ভরে যাবে।
যোগাযোগপ্রবণ
যতটা সম্ভব যোগাযোগপ্রবণ হয়ে উঠুন, নতুন নতুন মানুষের সাথে সম্পর্ক তৈরি করুন। মানুষের কাছে যান, মানুষের কথা শুনুন, প্রত্যকের কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানুন, হৃদয় দিয়ে অন্যকে বুঝতে চেষ্টা করুন। এভাবে আপনি খুব সহজেই নিজের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারবেন।
সন্তষ্টি লাভ
নিজের কাজ নিয়ে সবসময় সন্তুষ্ট থাকতে চেষ্টা করুন। করণীয় কাজের ভালো দিক খুঁজে বের করুন, নিজের কাজকে ভালোবাসুন, চাপ কমাতে সপ্তাহে অন্তত একদিন রিলাক্স করুন। এভাবে আপনার কাজের প্রতি বিরক্তভাব ও হতাশা দূর হবে, যা পৌঁছে দিবে সাফল্যের চুঁড়ায়।
নিজের ব্যাক্তিত্ব ও মননের বিকাশ ঘটান, আপনার আশেপাশের মানুষ ও পৃথিবীকে নিজের অবস্থান সম্পর্কে কর্মগুণে অবগত করুন। সব ধরণের নেতিবাচকতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুন। এভাবে চালিয়ে যেতে পারলে এক সময় আপনার ক্যারিয়ারে সাফল্য আসবেই। ততদিন পর্যন্ত ধৈর্য্য সহকারে অপেক্ষা করুন।

Post a Comment

0 Comments