পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস, মানসিক উদ্বেগ, অতিরিক্ত পরিশ্রম, স্নায়বিক দুর্বলতা ইত্যাদি নানা কারণ শরীরের রক্তচাপের উপর প্রভাব ফেলে। অনেক সময় অনেকে অজ্ঞান হয়ে পড়েন কম রক্তচাপের কারণে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আধুনিক জীবনযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই মাপকাঠিকে ১৪০/৯০ পর্যন্ত স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, রক্তচাপ যদি ১১০/৬০-এর নীচে নেমে যায়, তা হলে লো ব্লাড প্রেসার বলে তাকে ধরে নিতে হবে।
রক্তচাপ
অতিরিক্ত কমে গেলে মস্তিষ্ক, কিডনি, হৃৎপিণ্ডে ঠিক ভাবে রক্ত চলাচল করতে
পারে না। ফলে বুক ধড়ফড় করে, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, চোখে অন্ধকার ঘনিয়ে আসা,
বমি ভাব, স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়।
যেখানে সেখানেই এই সমস্যা হানা দিতে পারে।
চিকিৎসকের
মতে, অনেকেরই ধারণা, উচ্চ রক্তচাপের চেয়ে নিম্ন রক্তচাপ কম ভয়ের। প্রথমেই
এই মিথ ভেঙে ফেলা উচিত। উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে রোগী সহজেই কার্ডিয়াক
অ্যারেস্টের শিকার হতে পারেন। তাই বলে নিম্ন রক্তচাপের বেলায় তাকে অবহেলা
করার কোনও কারণ নেই। কারণ, হৃদযন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে নিম্ন রক্তচাপও।
তাই এমন হলেও দ্রুত পরামর্শ নিন চিকিৎসকের। দীর্ঘ দিন ধরেই রক্তচাপ কম
থাকলে অন্য কোনও অসুখের উপসর্গও হতে পারে এটি। তাই এমন হলে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে জেনে রাখা ভাল, হঠাৎ রক্তচাপ কমে গেলে
ঘরোয়া কী কী উপায় অবলম্ব করা উচিত।
হঠাৎ প্রেশার কমে গেলে কী করা উচিত
- চিকিৎসকদের মতে, এমন হলে প্রথমেই লবণ-চিনির পানি দিন রোগীকে। এক গ্লাস পানিতে ২-৩ চা চামচ চিনি ও এক চা চামচ লবণ মেশান। লবণের সোডিয়াম ও চিনির শর্করা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে ডায়াবেটিসের রোগী হলে চিনি বাদ দিয়ে বেশি করে লবণ-পানি খান। যেদিন এমন হবে, পারলে সেই দিনটা সব খাবারের মাঝেই রাখুন লবণ-চিনির পানি।
- রোগীর ঘাড়ে, কানের লতির দু’পাশে ও চোখে-মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। এতে তিনি অনেকটাই সুস্থ বোধ করবেন। স্নায়ুগুলি আরাম পাবে।
- শরীরে প্রোটিন কমলেও রক্তচাপের উপর তার প্রভাব পড়ে। দুধ ও ডিমে হাই প্রোটিন। তাই এমন হলে রোগীকে ডিম ও দুধ দিন । মূলত, ডিমের কুসুম।
- কফি প্রেশার বাড়াতে খুব কার্যকর। ক্যাফিন আছে এমন পানীয় তাড়াতাড়ি রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই তা কমে গেলে কড়া করে কফি খেতে দিন রোগীকে।
- বাড়িতে যষ্টিমধু থাকলে এই অবস্থায় তা খুব কাজে আসবে। এক কাপ পানিতে ১০০ গ্রাম যষ্টিমধু মিশিয়ে রেখে দিন। ২-৩ ঘণ্টা পর পানিটি খেতে দিন রোগীকে। যষ্টিমধু রক্তকে শুধু পরিশুদ্ধই করে না, বরং রক্তচাপের ভারসাম্যও বজায় রাখে।
0 Comments