আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ-এই বাক্যটি শুধু কথার কথা নয়। বরং এই বাক্যটির
মধ্যেই একটি পরিবার, একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের প্রতিচ্ছবি
লুক্কায়িত। আমরা অনেক আবেগ নিয়ে শিশুদের নানা কথা বলি। কিন্তু শিশুবান্ধব
পরিবেশ কতটা গড়ে তুলি বা প্রচেষ্টা চালাই? আমাদের চারপাশে অধিকাংশ
কর্মকাণ্ডই শিশুসহায়ক নয়। এরই মধ্যে আমাদের শিশুরা বেড়ে উঠছে। বেড়ে উঠতে
গিয়ে সবাই যে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের চাহিদা পূরণে
সক্ষম হয়ে উঠতে পারছে তা নয়। অনেক শিশুই বিরুদ্ধ পরিবেশে বেড়ে উঠতে উঠতে
মানসিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারছে না। ধৈর্য হারিয়ে ভুল পথে চলে যাচ্ছে,
ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিষিয়ে তুলছে নিজের এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যের
জীবন। হয়ে উঠছে সমাজ ও রাষ্ট্রের বোঝা। একটি শিশুর বেড়ে ওঠার পথে পথ হারিয়ে
ফেলার জন্য পরিবার কি মোটেই দায়ী নয়, বিশেষ করে বাবা কিংবা মা? আধুনিক
বিশ্বে স্বামী-স্ত্রীর বিয়ে বিচ্ছেদ নতুন কিছু নয়। বরং অধিকাংশ
স্বামী-স্ত্রীই বিচ্ছেদের মাধ্যমে উভয়ের মধ্যকার বিষাক্ত সম্পর্ক থেকে
মুক্তি খুঁজছে। কিন্তু এর ভয়াবহ ক্ষতির শিকার হচ্ছে আমাদের শিশুরা যাদের
ওপর আমাদের সবার ভবিষ্যতের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বভার রয়েছে। কিন্তু একটি
শিশু যদি চোখের সামনে বাবা-মায়ের সম্পর্ক ছিন্ন হতে দেখে, দুজনের প্রতি
দুজনের হিংসা-বিদ্বেষ প্রকাশ করতে দেখে তবে সেই শিশু কতটা স্বাভাবিক
মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারবে? তাকে দিয়ে সমাজ-রাষ্ট্রই বা কী আশা করতে
পারে? সুতরাং নতুন করে ভাববার সময় এখনই। দীর্ঘদিনের দাম্পত্য কলহের জেরে
কামরুন্নাহার মল্লিকা ও মেহেদী হাসানের মধ্যে ২০১৭ সালের ১২ মে বিবাহ
বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পরও সন্তান ধ্রুব (১২) ও লুব্ধের (৯) কথা বিবেচনা করে
দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে ১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি, আদালত দুটি শিশুর
প্রতি মমত্ব অনুভব করে যে মানবিক একটি সমাধানের প্রত্যাশা করছেন সারাদেশের
মানুষ তা অত্যন্ত প্রশংসার সঙ্গে গ্রহণ করবে।
প্রতিটি বিয়ে বিচ্ছেদের কারণে সন্তানরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সন্তান কখনোই মা-বাবার বিচ্ছেদ চায় না। সারাদেশে ডিভোর্স হওয়া দম্পতিদের সব সন্তানের অনুভূতি একই। তাদের মধ্যে কেউ তা প্রকাশ করতে পারে, কেউ তা প্রকাশের সুযোগ পায় না-আদালতের এই বক্তব্যই প্রমাণ করে বিয়ে বিচ্ছেদের শিকার হওয়া বাবা-মায়ের সন্তানেরা কত অসহায় ও বেদনাময় জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়। বাবা ও মায়ের মধ্যে সম্পর্ক জুড়ে দিতে শিশু দুটি যেভাবে আদালতের কাছে আবেদন করেছে তা সত্যিই হƒদয়বিদারক। প্রতিটি শিশুর বুকেই একইরকম কান্না। তারা বাবা-মাকে আলাদা দেখতে চায় না। বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হলে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত শিশুরা মায়ের কাছেই থাকবে এমন একটি আইন বহাল থাকলেও আইনই সব সময় শেষ কথা নয়। কারণ যাদের জন্য এই আইন বাবা-মায়ের প্রতি তাদের আবেগ, তাদের আকাক্সক্ষার গুরুত্ব দেয়াও জরুরি। কারণ কোনো শিশুই বাবা-মায়ের দূরত্ব চায় না, বিচ্ছেদ চায় না। তারা বাবা এবং মা উভয়ের ভালোবাসা ও মমতায় বেড়ে উঠতে চায়।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি এবং বিচ্ছেদ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বর্তমান বাস্তবতায় এ রকম ঘটনা অহরহ ঘটছে। কিন্তু যে সব দম্পতির সন্তান রয়েছে তাদের আরো মানবিক ও সহনশীল হওয়াটা জরুরি। কারণ তাদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মানে শুধু একটি বা দুটি শিশুর জীবনে ঘোর অনিশ্চয়তা নেমে আসা নয়। এর সঙ্গে সমাজ ও রাষ্ট্রের আগামীর স্থিতিশীলতা বজায় থাকার সম্পর্কও জড়িত। এটিও ভাবতে হবে। দেশের শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশের স্বার্থ রক্ষার দায়ও তাদের রয়েছে।
প্রতিটি বিয়ে বিচ্ছেদের কারণে সন্তানরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সন্তান কখনোই মা-বাবার বিচ্ছেদ চায় না। সারাদেশে ডিভোর্স হওয়া দম্পতিদের সব সন্তানের অনুভূতি একই। তাদের মধ্যে কেউ তা প্রকাশ করতে পারে, কেউ তা প্রকাশের সুযোগ পায় না-আদালতের এই বক্তব্যই প্রমাণ করে বিয়ে বিচ্ছেদের শিকার হওয়া বাবা-মায়ের সন্তানেরা কত অসহায় ও বেদনাময় জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়। বাবা ও মায়ের মধ্যে সম্পর্ক জুড়ে দিতে শিশু দুটি যেভাবে আদালতের কাছে আবেদন করেছে তা সত্যিই হƒদয়বিদারক। প্রতিটি শিশুর বুকেই একইরকম কান্না। তারা বাবা-মাকে আলাদা দেখতে চায় না। বাবা-মায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ হলে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত শিশুরা মায়ের কাছেই থাকবে এমন একটি আইন বহাল থাকলেও আইনই সব সময় শেষ কথা নয়। কারণ যাদের জন্য এই আইন বাবা-মায়ের প্রতি তাদের আবেগ, তাদের আকাক্সক্ষার গুরুত্ব দেয়াও জরুরি। কারণ কোনো শিশুই বাবা-মায়ের দূরত্ব চায় না, বিচ্ছেদ চায় না। তারা বাবা এবং মা উভয়ের ভালোবাসা ও মমতায় বেড়ে উঠতে চায়।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি এবং বিচ্ছেদ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বর্তমান বাস্তবতায় এ রকম ঘটনা অহরহ ঘটছে। কিন্তু যে সব দম্পতির সন্তান রয়েছে তাদের আরো মানবিক ও সহনশীল হওয়াটা জরুরি। কারণ তাদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মানে শুধু একটি বা দুটি শিশুর জীবনে ঘোর অনিশ্চয়তা নেমে আসা নয়। এর সঙ্গে সমাজ ও রাষ্ট্রের আগামীর স্থিতিশীলতা বজায় থাকার সম্পর্কও জড়িত। এটিও ভাবতে হবে। দেশের শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশের স্বার্থ রক্ষার দায়ও তাদের রয়েছে।
0 Comments