ভ্যাট

VAT (Value Added Tax) বা ভ্যাট:
মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) (VAT) হল এক প্রকারের পরোক্ষ কর, যা ভোক্তাকে সরাসরি প্রদান করতে হয় না। এটি সাধারণত পণ্যের সরবরাহের পুর্বেই এর মূল্যের উপরে  আরোপ করা হয়ে থাকে যা কোন পণ্য বা সেবার  ক্রয়মূল্যের সাথে অন্তর্ভুক্ত থাকে।
ভ্যাট(VAT) রেজিস্ট্রেশন করার প্রক্রিয়াঃ
অনলাইনে করার নিয়মঃ
১। www.vat.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।
২। প্রথমে Sign-Up করুন। সাইন-আপ হলো ভ্যাট অনলাইন সিস্টেমের সাথে আপনার পরিচিতি তৈরি করা। একটি একাউন্টি তৈরি করা। এ একাউন্ট দিয়ে ভ্যাট নিবন্ধন, দাখিলপত্র পেশসহ সব কাজ করা হবে। এখানে আপনি সিস্টেমে প্রবেশের জন্য User ID এবং Password পাবেন।
সাইন-আপের সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন: একটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন গ্রহণের জন্য Register as Taxpayer (Headquarter) নির্বাচন করবেন। কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের আওতায় শাখা নিবন্ধন নেয়ার পর সেই শাখার কাজ করার সময় Register as Taxpayer (Branch) নির্বাচন করে সাইন-আপ করতে হবে। অপর দিকে কোনো স্টাফকে কাজ করার দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে Register as Taxpayer’s Employee হিসাবে সাইন-আপ করতে হবে।
৩। সাইন-আপ ফরমে ডাটা প্রদানের করার পর Check বাটন চাপুন। কোনো ভুল থাকলে নির্দেশনা অনুসরণ করে সংশোধন করে Submit বাটন চেপে Submit করুন।
৪। ইমেইল পাবেন। ইমেইলের নির্দেশনা অনুসরণ করে www.vat.gov.bd ওয়েবসাইটে যেয়ে লগইন করুন। প্রথম লগইন এর সময় নির্দেশনা অনুযায়ী পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে নিন।
৫। ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য Forms হতে Mushak-2.1 Form নির্বাচন করুন।
৬। লক্ষ্য করুন, মূসক-২.১ ফরমের প্রথম ঘরে আপনার টিআইএন(TIN) এবং দ্বিতীয় ঘরে টিআইএন সনদে বিদ্যমান আপনার নাম দেখাচ্ছে। এ নামটি আপনার নিজের নাম। এবার মূসক-২.১ ফরমে অন্যান্য তথ্য দিন এবং ক্রমিক ৩ এর পদ্ধতিতে প্রথমে Check বাটন চাপুন। কোনো ভুল থাকলে নির্দেশনা অনুসরণ করে সংশোধন করে Submit বাটন চেপে Submit করুন।
৭। নির্দেশনা অনুসরণ করুন। আপনার নিজের নামে ৯ ডিজিটের একটি Business Identification Number (BIN) সংবলিত মূসক-২.৩ ফরমে একটি সনদ তৈরি হয়ে গেল। এটি আপনার ই-মেইলেও যাবে। আপনার নিজের নামে তৈরিকৃত এই Business Identification Number (BIN) টি মাস্টার বিআইএন হিসেবে বিবেচিত। এ বিআইএন এর জন্য আপনাকে কোনো কর প্রদান বা দাখিলপত্র পেশ করতে হবে না।
৮। এবার আপনার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নামে একটি বিআইএন গ্রহণের জন্য মূসক-২.২ ফরম পূরণ করুন। এখানে আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম লিখুন। এই নামে আপনার নতুন শাখা বিআইএন ও সনদ তৈরি হবে। এ নামে আপনাকে কর প্রদান করতে হবে, হিসাব রাখতে হবে এবং দাখিলপত্র পেশ করতে হবে।
৯। আপনার যদি একাধিক নামে একাধিক ব্যবসায় থাকে তাহলে প্রতিটির জন্য একটি করে মূসক-২.২ পূরণ করে একই নিয়মে সেগুলোর জন্য আলাদা বিআইএন নিন। সবগুলোর জন্যই কর দিতে হবে এবং দাাখিলপত্র পেশ করতে হবে।
১০। ব্রাঞ্চের জন্য আলাদা লোককে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে Register as Taxpayer (Branch) হিসাবে সাইন-আপ করা একজনকে সে দায়িত্ব দিন। কোনো শাখার জন্য কোনো স্টাফকে কাজ করার দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে Register as Taxpayer’s Employee হিসাবে সাইন-আপ করা কোনো স্টাফকে দায়িত্ব দিন।
১১। উদাহরণ: ধরা যাক মি. হাসানের ২টি প্রোপ্রাইটরশীপ ব্যবসা আছে, যথা: (ক) মাসুমা ট্রেডার্স এবং (খ) সোনার বাংলা ট্রাভেলস। তিনি তার নিজের টিআইএন ব্যবহার করে সাইন-আপ করবেন এবং প্রথমে মূসক-২.১ ফরম পূরণ করে মি. হাসান নামে একটি নিবন্ধন নিবেন। এটি মাস্টার বিআইএন। অতপর মূসক-২.২ ব্যবহার করে মাসুমা ট্রেডার্স নামে একটি এবং সোনার বাংলা ট্রাভেলস নামে আরেকটি বিআইএন নিবেন। তার বিআইএন ৩টি হলেও ব্যবসায় ২টি। কর প্রদান করতে হবে ২টির এবং দাখিলপত্রও পেশ করতে হবে ২টির। নিজের নামেরটির জন্য কিছু করতে হবে না।

এনবিআর অফিস গিয়ে করার নিয়মঃ
  1. আবেদনকারিকে  জোনাল এনবিআর অফিস হতে নির্ধারিত আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে;
  2. উপরোক্ত কাগজপত্রসহ পুরনকৃত আবেদনপত্র  এনবিআর পরিদপ্তের জমা দিতে হবে
  3. এনবিআর কর্তৃক কাগজপত্র যাচাই-বাচাই করা হবে
  4. এনবিআর কর্মকর্তা কর্তৃক পরিদর্শন
  5. অতঃপর আবেদনকারী ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সংগ্রহ করতে পারবেন
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
  1. আবেদনকারীর সদ্য তোলা পাসপোর্ট দুই কপি ছবি /কোম্পানির ক্ষেএে ম্যানেজিং ডিরেক্টরের তিন কপি ছবি / ব্যাক্তি মালিকানার ক্ষেএে মালিকের তিন কপি ছবি
  2. টিন (TIN) সার্টিফিকেট-এর ফটোকপি
  3. ট্রেড লাইসেন্স (Trade License)-এর ফটোকপি
  4. মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেলস-এর কপি
  5. জাতীয় পরিচয় (National ID)পত্র অথবা  পাসপোর্টের ফটোকপি
  6. ব্যাংক সচ্ছলতা সনদ (মূল কপি)
  7. অফিসের চুক্তিপত্র  
  8. বি ও আই রেজিস্ট্রেশনের ফটোকপি
  9. ইম্পোর্ট/ এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সনদ

ভ্যাট নিবন্ধন করতে হবে যাদেরকেঃ
১) করযোগ্য পণ্য উৎপাদনকারী , যার বার্ষিক টার্নওভার ৬০ লক্ষ টাকার বেশি।
২) সেসব পণ্য উৎপাদনকারীর যাদের জন্য ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৩) করযোগ্য সেবা প্রদানকারী যার বার্ষিক টার্ণওভার ৬০ লক্ষ টাকার বেশি।
৪) যেসব সেবা প্রদানকারীর ও যাদের ক্ষেত্রে টার্ণওভারের পরিমাণ নির্বিশেষ ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
৫) আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী (পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা)

Post a Comment

0 Comments